Type Here to Get Search Results !

ভগৎ সিং প্রথম পর্ব [Bhagat Singh]

 

ভগৎ সিং

Set by – Manas Adhikary



ভগৎ সিং প্রথম পর্ব। Bhagat Singh Part - I

ভগৎ সিং। পাবলিক সেফটি বিল। নওজোয়ান ভারত সভা। বটুকেশ্বর দত্ত। স্যান্ডার্স হত্যা। সেন্ট্রাল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি ভিতরে বোমা নিক্ষেপ।

নমস্কার, অভিনব  একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই, আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা  হলো ক্ষুদিরাম বসু। এই পর্বে থাকছে  ভগৎ সিং সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই  গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science,Pedagogy  ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। 

ভগৎ সিং সংক্ষিপ্তরুপ। About Bhagat Singh.

ভগৎ সিং একজন ভারতীয স্বাধীনতা সংগ্রামী যিনি ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন পাবলিক সেফটি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিাদস্বরূপ সেন্ট্রাল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির ভিতরে বটুকেশ্বর দত্তের সাথে বোমা নিক্ষেপ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অতুলনীয় অবদানের কারনে।

1907 সালের 28 সেপ্টেম্বর ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের বাঙ্গা গ্রামে একটি জাঠ পরিবারে তিনি জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবার নাম কিষান সিং এবং মাতা ছিলেন বিদ্যাবতী দেবী। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় দয়ানন্দ স্বরস্বতীর অ্যাংলো- বৈদিক উচ্চবিদ্যালয়ে যা তখন আর্য সমাজদ্বারা পরিচালিত হত। পরে তিনি লাহোর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তাঁর পরিবার রাজনৈতিকভাবে খুবই সক্রিয় ছিল। তাঁর বাবা এবং কাকারা সবাই স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। এমনকি যখন ভগতের জন্ম হয় তখন তাঁর পিতা জেলে বন্দী ছিলেন। ভগৎ সিং যেদিন জন্মগ্রহন করেন তার 2 দিন পরে 1 লা অক্টোবর জেল থেকে ছাড়া পান তার বাবা কৃষান সিং এবং 7 অক্টোবর ছাড়া পান তাঁর কাকা স্বর্ন সিং বা স্মরন সিং।

চোদ্দ বছর বয়স থেকেই ভগৎ সিং স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়তে থাকেন। এই বয়সেই তিনি সাধারন মানুষের উপর ব্রিটিশদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেন। নানখানা সাহিব গুরুদ্বারে ব্রিটিশ পুলিশের দ্বারা নিহত নিরীহ ভারতবাসীর জন্য তিনি গর্জে ওঠেন। তরুন ভগৎ গান্ধিজীর অহিংস আন্দোলনের সাথে একমত হলেন না। তিনি সশস্ত্র আন্দোলনকেই হাতিয়ার হিসাবে বেছে নিলেন।

1923 সালে তিনি যখন লাহোরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন তখন তাঁর জাতীয়তাবাদী কর্মকান্ড আরও বিস্তৃতি লাভ করে। তিনি সাহিত্য পাঠ করতে ভালোবাসতেন, তাঁর প্রিয় কবি ছিলেন মহম্মদ ইকবাল। তিনি উদু পাঞ্জাবি ভাষায় কিছু সংবাদপত্র সম্পাদনা করতেন যা অমৃতসর থেকে প্রকাশিত হত। তিনি মাঝেমাঝেই বাল বলওয়ান্ত, রঞ্জিত এবং বিদ্রোহী ছদ্মনামে লিখতেন। যুব ইতালীয় আন্দোলনের দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে তিনি 1926 সালের মার্চ মাসে ভারতীয় তরুনদের নিয়ে 'নওজোয়ান ভারত সভা' গড়ে তোলেন। পরে তিনি হিন্দুস্থান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশান নামক একটি দলে যোগদান করেন। এই দলটিতে তখন চন্দ্রশের আজাদ, রামপ্রসাদ বিসমিল, আশফাকল্লাহ খান আরও অনেক স্বনামধন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ছিলেন। 1927 সালে পুলিশ ভগৎ সিং কে আটক করে 1926 সালে লাহোরে একটি বোমা বিস্ফোরনের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে। পাঁচ সপ্তাহ পরে তাঁকে টাকার বিনিময়ে জামিন দেওয়া হয়।

সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন কালীন লালা লাজপত রায় লাহোরে পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হন এবং পরে প্রান হারান। এই লাঠিচার্জের সময় পুলিশ সুপার ছিলেন জেমস স্কট এবং সহকারী পুলিশ সুপার ছিলেন স্যান্ডার্স। এরাই লাঠিচার্জের আদেশ দিয়েছিলেন। ভগৎ সিং ও লালা লাজপত রায়ের অনুগামীরা ঠিক করেন যে এই ঘটনার প্রতিশোধ নেবেন। তাঁর সাথে চন্দ্রশেখর আজাদ, রাজগুরু এবং শুকদেব থাপার ও যোগ দেন। তাঁরা জেমস স্কটকে হত্যা করতে গিয়ে পি স্যান্ডার্সকে হত্যা করেন। এই ঘটনার পর ভগৎ সিং লাহোর ছেড়ে ছদ্মবেশে লখনউ হয়ে হাওড়ায় পালিয়ে আসেন।

এরপর তিনি পাবলিক সেফটি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য সেন্ট্রাল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলিট ভিতরে বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনা গ্রহন করেন। এই বোমা ছোঁড়ার উদ্দেশ ছিল প্রতিবাদ করা কাউকে হত্যা করা না। পরিকল্পনা মতো 1929 সালের 8 এপ্রিল বটুকেশ্বর দত্তের সাথে ভগৎ সিং অ্যাসেম্বলির ভিতর অধিবেশন চলাকালীন দুটি বোমা নিক্ষেপ করেন এবং পালানোর সুযোগ থাকলেও পালিয়ে না গিয়ে 'ইনকিলাব জিন্দাবাদ' স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর তাঁরা দুজন

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। প্রথমে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ হলেও গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তার কাছে পিস্তল পাওয়া যাওয়ার অপরাধে ভগৎ সিং কে ফাঁসীর আদেশ দেওয়া হয়। এইসময় সাহারানপুরে ভগৎ সিংএর দলের বোমা বানানোর ঘাঁটি আবিষ্কার করে ব্রিটিশ সরকারের পুলিশ। ভগতসহ রাজগুরু, সুখদেব এবং আরও 21 জনকে বোমার দ্বারা ব্রিটিশ পুলিশ হত্যার (সান্ডার্সকে হত্যা) অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। নতুন অভিযোগের শুনানি পর্যন্ত তাঁর ফাঁসির আদেশ স্থগিত রাখা হয়। ইহা লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত। এইসময় ইউরোপীয় বন্দিদের সাথে ভালো ব্যবহার এবং ভারতীয় কারাবন্দীদের সাথে দুর্ব্যবহার করার প্রতিবাদে তিনি জেলের মধ্যে অনশন করতে শুরু করেন। এইসময় জওহরলাল নেহেরু ভগত ও তাঁর সহবন্দীদের সাথে জেলখানায় দেখা করতে আসেন। একসময় কংগ্রেসের অনুরোধে তিনি অনশন তুলে নেন। 1930 সালের 7 অক্টোবর তিন ব্রিটিশ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত এক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ভগৎ সিং, সুখদেব ও রাজগুরুকে অপরাধী সাব্যস্ত করে ফাঁসীর আদেশ কার্যকর করার রায় প্রদান করে। অবশেষে 1931 সালের 23 মার্চ সন্ধ্যা 7 টায় (নির্ধারিত সময়ের ঠিক 11ঘন্টা আগে) গোপনে এই তিন বিপ্লবীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর ফরা হয়। ফাঁসির পর এই তিন শহিদের মৃতদেহ জেলের পেছনের দেওয়াল ভেঙে তৎকালীন লাহোরের (বর্তমানে পাঞ্জাব) ফিরজপুর জেলার হুসেনিওয়ালা গ্রামে তাঁদের দাহ করা হয় এবং শতদ্রু নদীর জলে তাঁদের ভস্ম করা হয়। ভগৎ সিং এর মাতা বিদ্যাবতী দেবী ভগৎ সিং এর ফাঁসীর পর লাহোরের এক জনসভায় বক্তৃতা দেন যে-

'আমার এক পুত্রকে তোমরা ফাঁসি দিয়েছো, জেলে বন্দী করে আমার ছোট দেওর সর্দার স্বতন্ত্র সিং এর উপর তোমরা এমন চরম অত্যাচার চালিয়েছ যে ভয়াবহ যক্ষা রোগের শিকার হয়ে তাঁকে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। অপর দেওর সর্দার অজিত সিং এর ওপর নির্বাসন দন্ডের হুকুম জারি করে তাকে বিদেশে বহিস্কার করেছ। আমার অপর দুই পুত্রকে গ্রেপ্তার করে বিনা বিচারে কারাগারে বন্দী করে রেখেছ। তোমরা কী ভেবেছ এতে আমি ভয় পেয়েছি? না, আমি নিঃশেষ হয়ে যেতে পারি কিন্তু কিছুতেই মাথা নত করব না। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে আমি বলতে চাই, আমার আর যে দুটি পুত্র আছে তাদেরও দেশের সেবায় আমি উৎসর্গ করলাম। শয়তান, তোমাদের লালসা যদি আজও তৃপ্ত না হয়ে থাকে তবে এই দুই পুত্রকেও তোমরা শেষ করো'--

বর্তমানে হুসেনিওয়ালা গ্রামে এই তিন বীর শহিদের স্মৃতিতে অমর জ্যোতি স্থাপন করা হয় এবং ভগৎ সিং এর সৌধটি ভারতের মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি নিবেদিত।



ভগৎ সিং দ্বিতীয় পর্ব( অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর) >>>>

ক্ষুদিরাম বসু>>>>

ধন্যবাদ

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 

 

প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন

 টেলিগ্রাম গ্রুপ  যোগদান করার জন্য - Click Here

পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here

ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে  - Click Here

প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here

মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here

আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here

 ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here


ভগৎ সিং। পাবলিক সেফটি বিল। নওজোয়ান ভারত সভা। বটুকেশ্বর দত্ত। স্যান্ডার্স হত্যা। সেন্ট্রাল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি ভিতরে বোমা নিক্ষেপ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad