Type Here to Get Search Results !

সিরাজ-উদ-দৌল্লা প্রথম পর্ব [Siraj-ud-Daulah]

 সিরাজ-উদ-দৌল্লা

Set by - Manas Adhikary

সিরাজ-উদ-দৌল্লা প্রথম পর্ব। Siraj-Ud-Daulah Part - I

সিরাজ-উদ-দৌল্লা। পলাশীর যুদ্ধ। সিনফ্রে। ঘষেটি বেগম। খাজো ওয়াজিদ। নারায়ন দাস। মোহনলাল। আলিনগর সন্ধি। অন্ধকূপ হত্যা। মনিহারের যুদ্ধ। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব।

নমস্কার, অভিনব  একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই।  আজকে  আপনাদের  জন্য  আলোচনা করা হলো– আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌল্লা সম্পর্কে কিছু  সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই  গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

সিরাজ-উদ-দৌল্লা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। About Siraj-Ud-Daulah. 

 

আলীবর্দী খাঁ যখন পাটনার শাসনভার লাভের সময়  তাঁর তৃতীয়া কন্যা আমেনা বেগমের গর্ভে সিরাজের জন্মগ্রহন হয়। এ কারণে নবাব সিরাজের জন্মকে সৌভাগ্যের লক্ষণ হিসেবে মনে করে নবজাতককে পোষ্যপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। সিরাজ তার মাতামহের স্নেহ-ভালোবাসায় বড় হতে থাকেন। সিরাজের  পিতা ছিলেন জৈনুদ্দিন আহমেদ খান। ১৭৪৬ খ্রিষ্টাব্দে মারাঠাদের বিরুদ্ধে আলীবর্দী খান -এর যুদ্ধের সময় কিশোর সিরাজদ্দৌলা তার সাথী হন। আলীবর্দী সিরাজদ্দৌলাকে বালক বয়সেই পাটনার শাসনকর্তা হিসাবে নিযুক্ত করেন। সে সময় সিয়ারজ যেহেতু নাবালক তাই সিয়ারজের হয়ে রাজা জানকীরাম  রাজপ্রতিনিধিত্ব করতেন। কিন্তু এই বিষয়টি সিরাজদ্দৌলা মেনে নিতে পারেনি। তাই তিনি একদিন গোপনে কয়েকজন বিশ্বস্ত অনুচরকে নিয়ে ভ্রমণের নাম করে স্ত্রী লুৎফুন্নেসাকে সঙ্গে নিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে বের হয়ে পাটনা উপস্থিত হন এবং জানকীরামকে তাঁর শাসনভার ছেড়ে দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু নবাবের বিনা অনুমতিতে জানকীরাম তাঁর শাসনভার ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে দুর্গের দ্বার বন্ধ করে বৃদ্ধ নবাবের কাছে বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে দূত পাঠান। অন্যদিকে জানকীরামের আচরণে ভীষণ ক্ষুদ্ধ হয়ে সিরাজদ্দৌলা দুর্গ আক্রমণ করেন। উভয়পক্ষে লড়াই শুরু হয়ে গেলে সংবাদ পেয়ে আলীবর্দী খাঁ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। সেদিনই আলীবর্দী খাঁ দুর্গের অভ্যন্তরস্থ দরবারে স্নেহভাজন দৌহিত্রকে পাশে বসিয়ে ঘোষণা দেন, সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে সিরাজদৌল্লার নাম ঘোষণা করেন। ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজ হুগলী ভ্রমণ করেন।  এ সময় ইংরেজ, ওলন্দাজ ও ফরাসি কোম্পানির প্রেসিডেন্টরা তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করেন। ১৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দে নবাব আলীবর্দী খান মুর্শিদাবাদে মৃত্যবরণ করেন।  অপুত্রক আলিবর্দী খানের মনোনীত উত্তরাধিকারীরূপে তাঁর মৃত্যুর পর ১৭৫৬ খ্রী: সিরাজ বাংলার নবাব হন। তার প্রতিদ্বন্ধী হলেন আলিবর্দীর দ্বিতীয়া কন্যার পুত্র পুর্নিয়ার শাসনকর্তা সওকৎ জং। এই সময় সওকত কে সমর্থন করলেন আলিবর্দীর জ্যেষ্ঠা কন্যা নিঃসন্তনা ঘসেটি বেগম ও তার ধুরন্ধর দেওযান রাজবল্লভ। সিরাজের সংকট ঘনীভূত হল যখন স্ব-স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত দুই ধনকুবের জসৎ শেঠ ও উমিরচাঁদ এবং কাশিমবাজার কুঠির প্রধান ওয়াটসন ও সওকৎ -ঘসেটি -রাজবল্লভ ষড়যন্ত্রে যোগ দিলেন। সিরাজ নিজেকে রক্ষা করার জন্য ঘসেটি বেগমের প্রাসাদ আক্রমণ করে তার ধন- সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেন এবং তাকে কৌশলে নিজ প্রাসাদে এনে  নজরবন্দী করে রাখেন। সিরাজ মাত্র ২৩ বছরের যুবক ছিলেন এবং ক্রোধীও বটে। ইংরেজরা এমন কয়েকটি কাজ করেছিল যে স্বাভাবিকভাবেই ইংরেজদের প্রতি তার রাগ আরও বেড়ে গিয়েছিল। ইতিপূর্বে ইংরেজরা সিরাজের নির্দেশ অমান্য করে ফোর্ট উইলিয়মকে অধিকতর সুরক্ষিত করেছিল। দ্বিতীয়ত, তাদের কাশিমবাজার কুঠিতে তারা সিরাজকে প্রবেশ পর্যন্ত করতে দেয়নি তৃতীয়ত, সিংহাসনে আরোহন করার পর কলকাতার গভর্নর ড্রেক তাকে অভিনন্দন জানাননি। উপরন্তু তিনি রাজবল্লভের পুত্র কৃষ্ণদাসকে কলকাতায় আশ্রয় দিয়েছিলেন। এই  রাজবল্লভকে নবাব তহবিল তছরুপের অভিযোগ মুর্শিদাবাদে আটক করেন এবং তার সম্পত্তি  বাজেয়াপ্ত করার জন্য ঢাকায় সৈন্য পাঠান। কিন্তু আগেই সাবধান বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষ্ণদাস সপরিবারে সমস্ত ধন-সম্পত্তিসহ ড্রেকের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। নবাব তার পলাতক প্ৰজা কৃষ্ণ দাসের প্রত্যাপর্নের দাবি জানালেও ইংরেজরা সে আদেশে কর্ণপাত না করে তাদের অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করেছিল। এইসব ঘটনা নবাব ও কোম্পানীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে সাহায্য করেছিল। ইংরেজদের এই আচরণ নবাবের সঙ্গে যুদ্ধ অনিবার্য করে তুলেছিল। এখন সিরাজ-বিরোধী ষড়যন্ত্রে ইংরেজরা যোগদান করলে খুব স্বাভাবিকভাবেই ক্রদ্ধ সিরাজ তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য অগ্রসর হন। প্রথমেই তিনি কাশিমবাজারে ইংরেজ কুঠিটি দখল (4ঠা জুন, 1756) এবং পরদিনই তিনি কলকাতা অভিমুখে অগ্রসর হন। 16ই জুন কলকাতা পৌঁছাবার পর তিনি ফোর্ট উইলিয়ম অবরোধ করেন। তিনদিন পর গভর্নর ড্রেক, সেনাবাহিনীর প্রধান ও অন্যান্য নেতৃত্বস্থানীয় ইংরেজ কলকাতা ত্যাগ করে ফলতায় পালিয়ে যান। সিরাজদ্দৌল্লা মানিকচাঁদের হাতে কলকাতার শাসনভার অর্পণ করে ১২ই জুলাই তিনি মুর্শিদাবাদে ফিরে এসে সওকত জং এর বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। যুদ্ধে সওকত জং, পরাজিত ও নিহত হন। ইতিমধ্যে কোম্পানীর মাদ্রাজ কাউন্সিল, ক্লাইভ ও এডমিরল ওয়াটসনের নেতৃত্বে কলকাতা পুনরুদ্ধারের জন্য বিরাট বাহিনী পাঠিয়ে দেয়। অবশেষে 1757খ্রীঃ এ 2 রা জানুয়ারি মানিকচাঁদের বিশ্বাসঘাতকতায় ইংরেজ  সেনপতি ক্লাইভ বিনাযুদ্ধে কলকাতা পুনরাধিকার করেন এবং পরে হুগলী লুণ্ঠন করেন। এই সময় আহম্মদশাহ আবাদলী দিল্লি আক্রমণ করে লুটতরাজ করে। এতে শঙ্কিত হয়ে সিরাজদ্দৌল্লা ইংরেজদের সাথে নতুন যুদ্ধে যেতে সাহসী হন নি। ফলে সহজেই ইংরেজরা ফরাসী কুঠি দখল করে নেয়। পলাতক ফরাসিরা মুর্শিদাবাদে আশ্রয় নেয়। এছাড়া সিরাজ ইংরেজদের শায়েস্তা করার জন্য দাক্ষিণাত্যের  বুসির সাথে পত্রালাপ করেন। ইংরেজরা তাদের রাজত্ব কায়েম রাখার জন্য সিরাজকে অপসারণের জন্য দেশীয় ক্ষমতালোভীদের সাথে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এই দলে জগৎশেঠ, মীরজাফর, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ যোগ দেয়। তারা সিরাজের পরিবর্তে মীরজাফরকে নবাব বানানোর ষড়যন্ত্র শুরু করে। এই সময় মীরজাফর ছিলেন বাংলার প্রধান সেনাপতি। সিরাজ কর্তৃক ক্রমাগত অপমানের কারণে সে সিরাজের বিপক্ষে চলে যায়। ক্লাইভের কাছে এদের এই ষড়যন্ত্রের কথা প্রকাশ পেলে, ক্লাইভ এদের সাহায্যদানে অঙ্গীকার করেন। ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে কুচক্রীদের সাথে ইংরেজদের দুটি চুক্তি হয়। এই অবস্থায় নবাব সসৈন্যে কলকাতার উপকণ্ঠে উপস্থিত হয়ে কোনরকম যুদ্ধ না করেই তিনি ইংরেজদের সাথে  আলিনগরের সন্ধি (9 ফেব্রু, 1757) করেন।  এই চুক্তির একটি ছিল আসল, অপরটি জাল।

আসল চুক্তিতে ছিল, মীরজাফর নবাব হলে সিরাজ-প্রদত্ত সকল বাণিজ্যিক সুবিধা ইংরেজদের দেওয়া হবে। বাংলাদেশ থেকে ফরাসীদের বিতারিত করবে। সিরাজের কলকাতা আক্রমণের ফলে কলকাতাবাসীর যে আর্থিক ক্ষতিির সময় উমিচাঁদের স্বার্থের ব্যাপারটি বাদ দেওয়া হয়। উমিচাঁদ উপযুক্ত পুরস্কার না পেলে, এই ষড়যন্ত্রের কথা সিরাজ জানিয়ে দেবে এই হুমকি দিলে, আর একটি জাল পত্র তৈরি করা হয়। এই পত্রে উমিচাঁদের উপযুক্ত পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

ইংরেজরা সুযোগ বুঝে ফরাসী ঘাটি চন্দননগর আক্রমণ করে এবং নবাবের নিষেধ সত্ত্বেও ক্লাইভ চন্দননগর দখল করেন (মার্চ,1757)। এইভাবে ইংরেজ কোম্পানী ধীরে ধীরে নবাবের সার্বভৌম শক্তির ওপর হস্তক্ষেপ করেছিল। তাদের এই আচরন নবাবকে শঙ্কিত করে তোলও।  অপরদিকে ইংরেজরাও বুঝতে পারে যে, যতদিন সিরাজ বাংলার গদিতে থাকবেন ততদিন বাংলায় তাদের স্বার্থ নিরাপদ হবে না। তাঁকে গদিচ্যুত করে ইংরেজদের পক্ষে অধিকতর অনুকূল মনোভাবাপন কোন ব্যক্তিকে  সিংহাসন বসাতে তারা সচেষ্ট হল। শেষপর্যন্ত ক্লাইভ আলিবর্দীর ভগ্নিপতি ও সিরাজের অন্যতম প্রধান সেনাপতি মীরজাফরকে মসনদে বাসার প্রতিশ্রুতি দেন। ষড়যন্ত্রের উদ্যোগপর্ব শেষ হলে ফরাসীদের আশ্রয় দান করায় ক্লাইভ সিরাজের বিরুদ্ধে সন্ধিভঙ্গের অভিযোগে যুদ্ধঘোষনা করলেন। জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে উভয়পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয।(23শে জুন, 1757)। নবাবের পক্ষে সৈন্য ছিল প্রায় ৫০,০০০। নবাবের মূল বাহিনীতে ছিল ৫০টি কামান। ফরাসি সেনাপতি সিনফ্রে-এর অধীনে ছিল ৪টি কামান।

পক্ষান্তরে ইংরেজদের পক্ষে সৈন্য ছিল মাত্র ৩,০০০। কামান ছিল ৮টি। এই পলাশীর যুদ্ধ ছিল ছল চাতুরীর খেলামাত্র। সেনাপতি মীরজাফর পলাশীর যুদ্ধ রায়দুর্লভ নবাবের সেনাবাহিনীর বৃহত্তর অংশের দায়িত্ব নিয়ে সম্পূর্ণ নির্দয়ভাবে দূরে দাঁড়িয়ে থাকেন। কেবলমাত্র সেনাধ্যক্ষ মীরমদন ও মোহনলাল এবং জনৈক ফরাসি সেনানায়ক সিনফ্রে বিপুল বিক্রমে যুদ্ধ করেছিলেন। শেষপর্যন্ত বিক্ষিপ্ত একটি গোলার আঘাতে মীরমদন নিহত হন এবং নবাবের নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ নির্দেশে মোহনলাল পশ্চাদপসারন করতে বাধ্য হন। সঙ্গে সঙ্গে পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল ও নবাবের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। পরাজিত সিরাজ শেষ পর্যন্ত পালাবার সময় রাজমহলের কাছে সিরাজ সপরিবারের মীরজাফরের সৈন্যদলের হাতে ধরা পড়েন। এরপর মীরাজাফরের  পুত্র মীরনের নির্দেশে সিরাজকে হত্যা করা হয়। এরপর ইংরেজরা বাংলার সিংহাসনে মীরজাফরকে অধিষ্ঠিত করেন।

সাড়ে চারশ দিনের ঘটনাপ্রবাহ (সংক্ষেপিত)

১৭৫৬ সাল : নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যু হয়। বাংলার মসনদে নবাব সিরাজউদ্দৌলার আরোহণ করেন।  এই সময় সিরাজউদ্দৌলার বয়স ছিল মাত্র তেইশ বছর।

১৭৫৬ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ : ইউরোপে সপ্তবর্ষব্যাপী যুদ্ধের অজুহাতে বাংলায় ইংরেজ ও ফরাসিরা দুর্গ নির্মাণ করে। নবাবের আদেশে ফরাসি দুর্গ নির্মাণ বন্ধ হলেও ইংরেজদের দুর্গ নির্মাণ অব্যাহত থাকে।  

১৬ মে, ১৭৫৬ সাল : বিদ্রোহী শওকত জঙ্গকে দমনের উদ্দেশে পুর্নিয়ায় নবাব সিরাজউদ্দৌলার সামরিক অভিযান শুরু করেন।  

১৬ জুন, ১৭৫৬ সাল : ক্রুদ্ধ নবাব সিরাজউদ্দৌলা পুর্নিয়ায়  শওকত জঙ্গকে দমনে না গিয়ে মুর্শিদাবাদে ফিরে এলেন। কলকাতায় ইংরেজদের দমনের উদ্দেশে সসৈন্যে যাত্রা করেন। পথে কাশিমবাজারে ইংরেজদের কুঠি  দখল।

২০ জুন, ১৭৫৬ সাল : কলকাতার দুর্গ নবাব সিরাজউদ্দৌলার দখল করেন। গভর্নর ড্রেক ও অন্যান্য ইংরেজদের ফলতায় পলায়ন। গভর্নর হলওয়েলের আত্মসমর্পণ করেন।

১৬ অক্টোবর, ১৭৫৬ সাল : পুর্নিয়ার নবাবগঞ্জে বিদ্রোহী শওকত জঙ্গের সঙ্গে নবাব সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধ। যুদ্ধে শওকত জঙ্গ পরাজিত ও নিহত হয়।

১৫ ডিসেম্বর, ১৭৫৬ সাল : মাদ্রাজ থেকে ক্লাইভ ও অ্যাডমিরাল ওয়াটসনের অধীনে একদল সৈন্যের ফলতা আগমন ও ড্রেকের সঙ্গে যোগদান।

২৭ ডিসেম্বর, ১৭৫৬ সাল : ইংরেজ সৈন্য ও নৌবহরের কলকাতা পুন্রুদ্ধারে উদ্দেশ্যে কলকাতা অভিমুখে যাত্রা

২ জানুয়ারি, ১৭৫৭ সাল : ইংরেজদের কলকাতা পুনর্দখল।

৩ জানুয়ারি ১৭৫৭ সাল : দখলদার ইংরেজ বাহিনীর আগমনের সংবাদ পেয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা অভিমুখে যুদ্ধযাত্রা।

১০ জানুয়ারি, ১৭৫৭ সাল : রবার্ট ক্লাইভ হুগলি শহর দখল করে লুটতরাজ শুরু করে। পার্শ্ববর্তী গ্রাম জনপদ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়।

১৯ জানুয়ারি, ১৭৫৭ সাল : নবাব সিরাজউদ্দৌলার হুগলি আগমন। ইংরেজদের কলকাতা প্রস্থান।

৩ ফেব্রুয়ারি, ১৭৫৭ সাল : নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলকাতার শহরতলী আমির চাঁদের বাগানে শিবির স্থাপন করেন।

৫ ফেব্রুয়ারি, ১৭৫৭ সাল : নবাব সিরাজউদ্দৌলার শিবির আক্রমণ করে ক্লাইভ ও ওয়াটসন শেষ রাতে সিরাজবাহিনী পাল্টা আক্রমণ চালালে ক্লাইভ পিছু হটেন।

৯ ফেব্রুয়ারি, ১৭৫৭ সাল : নবাব সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে ইংরেজদের আলীনগরের সন্ধি

২৩ মার্চ ১৭৫৭ সাল : ক্লাইভ কর্তৃক ফরাসি ঘাঁটি ও বাণিজ্য কেন্দ্র চন্দন নগর দখল।

২৩ জুন, ১৭৫৭ সাল : ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশির প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার বাহিনীর সঙ্গে রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ইংরেজ বাহিনীর যুদ্ধ।

 

পলাশীর যুদ্ধ , ২৩ জুন ১৭৫৭

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পক্ষ

১। সৈন্যসংখ্যা -  ৫০ হাজার। এর মধ্যে পদাতিকবাহিনি ছিল ৩৫ হাজার, অশ্বারোহী বাহিনী ছিল ১৫ হাজার                

২। মোট কামান ছিল ৫৩ টি

৩। ফরাসি সেনাপতি মঁসিয়ে দ্য সিনফ্রের অধীনে ছিল ৪ টি কামান ও ৪৫ জন ফরাসী সৈন্য।

 

রবার্ট ক্লাইভের পক্ষ

১। সৈন্য সংখ্যা ৩ হাজার।  এর মধ্যে ভাড়াটে দেশীয় সিপাহি ছিল ২১০০, ইউরোপীয়ান ছিল ৯৫০ জন, ১৫০ জন ছিল গোলন্দাজ সেনা।

২। মোট কামান ছিল ৬ টি

৩। মীরজাফর- যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতক সেনাপতি মীরজাফরের চক্রান্তে এক বিশাল সৈন্যবাহিনী যুদ্ধ থেকে বিরত থাকে। মীরমদন ও মোহন লাল তাদের অধীন স্বল্পসংখ্যক সৈন্য নিয়ে প্রাণপণ যুদ্ধ করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

 

২৬ জুন, ১৭৫৭ সাল : নবাব হিসেবে মীরজাফর আলী খানের অভিষেক।

২৯ জুন, ১৭৫৭ সাল : মীরজাফরের সিংহাসনে আরোহণ

৩০ জুন, ১৭৫৭ সাল : রাজমহলে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার।

২ জুলাই, ১৭৫৭ সাল : শৃঙ্খলিত অবস্থায় নাবব সিরাজউদ্দৌলাকে মুর্শিদাবাদে আনয়ন। রাতে মীরজাফরের পুত্র মীরনের আদেশে ঘাতক মোহাম্মদী বেগের ছুরিকাঘাতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা মৃত্যু বরণ করেন।


বাংলার নবাবী রাজত্ব দ্বিতীয় পর্ব (আলীবর্দি খান)>>>>

বাংলার নবাবী রাজত্ব চতুর্থ পর্ব (সিরাজ উদ দৌল্লা  MCQ)>>>>

 


প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন

 টেলিগ্রাম গ্রুপ  যোগদান করার জন্য - Click Here


ধন্যবাদ

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 

 

পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here

ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে  - Click Here

প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here

মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here

আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here

 ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here

 

সিরাজ-উদ-দৌল্লা। পলাশীর যুদ্ধ। সিনফ্রে। ঘষেটি বেগম। খাজো ওয়াজিদ। নারায়ন দাস। মোহনলাল। আলিনগর সন্ধি। অন্ধকূপ হত্যা। মনিহারের যুদ্ধ। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad