Type Here to Get Search Results !

স্কন্দগুপ্ত প্রথম পর্ব [Scandagupta]

 স্কন্দগুপ্ত 

Set By - Manas Adhikary 

 

স্কন্দগুপ্ত প্রথম পর্ব Scandagupta Part - I

স্কন্দগুপ্তপুরুগুপ্তদ্বিতীয় কুমারগুপ্ত বুধগুপ্তSkandagupta.

নমস্কার, অভিনব  একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই।  আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো  স্কন্দগুপ্ত প্রথম পর্ব আজ এই পর্বে থাকছে শেষ  শক্তিশালী গুপ্ত সম্রাট  স্কন্দগুপ্ত সম্পর্কিত  সংক্ষিপ্ত  আলোচনা । পরবর্তী পর্বে  স্কন্দগুপ্ত সম্পর্কিত  থেকে অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর  আলোচনা করা হবে । পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই  গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।


স্কন্দগুপ্ত  সংক্ষিপ্তরূপ| About Scandagupta.


প্রথম কুমারগুপ্তের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র স্কন্দগুপ্ত ৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহন করেন বেশীরভাগ ঐতিহাসিকের মতে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সিংহাসনের উপর স্কন্দগুপ্তের ন্যায্য অধিকার ছিল না, তিনি বলপূর্বক সিংহাসন অধিকার করেন এই ধারনার পিছনে বেশ কয়েকটি যুক্তিও দেখিয়েছেন তাঁরা

প্রথমত, উত্তরপর্বের লেখমালায় গুপ্তরাজবংশের তালিকায় স্কন্দগুপ্তের উল্লেখ নেই অথচ সেখানে প্রথম কুমারগুপ্তের উত্তরাধিকারী রূপে তার বৈমাত্রেয় ভাই পুরুগুপ্তের নাম আছে

দ্বিতীয়ত, স্কন্দগুপ্ত তার লেখে নিজের মায়ের নাম উচ্চারন করেন নি অথচ তার পূর্বসূরিদের ক্ষেত্রে তাদের মায়েদের কথা উল্লেখ করেছেন। তার বৈমাত্রেয় ভাই পুরুগুপ্ত, প্রথম কুমারগুপ্তের প্রধান মহিষী অনন্তদেবীর পুত্র

অনেকে এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মনে করেন, প্রথম কুমারগুপ্তের প্রধান মহিষীর গর্ভে নয়, অন্য কোন পত্নী বা উপপত্নীর গর্ভে স্কন্দগুপ্তের জন্ম হয়েছিল। ফলে গুপ্তবংশের সিংহাসনের উপর তার ন্যায্য দাবি ছিল না। তিন পিতা প্রথম কুমারগুপ্তের প্রকৃত উত্তরাধিকারী পুরুগুপ্তকে বঞ্চিতকরে বলপূর্বক সিংহাসন দখল করেন। স্কন্দগুপ্ত যে বলপূর্বক সিংহাসন দখল করেন, এই মত সকলে স্বীকার করেন না। তারা বলেন, স্কন্দগুপ্ত হয়তো মহাদেবী অনন্তদেবীর পুত্র ছিলেন না, কিন্তু তিনি নিঃসন্দেহে তার ভাইদের মধ্যে যোগ্যতম ছিলেন। জ্যেষ্ঠ নয়, শ্রেষ্ঠই সিংহাসনে বসবেন গুপ্তরাজবংশের সিংহাসনে। প্রথম পর্বে এই রেওয়াজই ছিল। উত্তরপর্বের গুপ্তলেখমালায় স্কন্দগুপ্তের নাম পাওয়া নিয়ে তারা বলেন, লেখগুলো সবই স্কন্দগুপ্তভ্রাতা পুরুগুপ্তের পুত্র-পৌত্র-প্রপৌত্রদের রাজত্বকালে উৎকীর্ন ফলে স্কন্দগুপ্তের উল্লেখ না থাকাটাই স্বাভাবিক তারা আরও মনে করেন, জুনাগড় লেখে স্কন্দগুপ্তের সার্বভৌমত্বের দাবি আছে কিন্তু কোনও ভ্রাতৃ-কলহের ইঙ্গিত নেই মুদ্রায় অঙ্কিত স্কন্দগুপ্তের লক্ষ্মির হাতে অঙ্গুরীয় বা মালাগ্রহনের ছবির উল্লেখ প্রসঙ্গে তারা বলেন, যে রমনীর মূর্তি মুদ্রায় অঙ্কিত তিনি লক্ষ্মি বা রাজলক্ষ্মী নন, তিনি স্কন্দগুপ্তের মহিষী নন, তিনি আসলে স্কন্দগুপ্তের মহিষী৷ আসলে স্কন্দগুপ্ত বলপূর্বক, না স্বাধিকারে পৈতৃক সিংহাসনে বসেন তা এখনও সুনিশ্চিত নয় তবু মনে হয়, প্রথম কুমারগুপ্তের মৃত্যর পর তিনি সিংহাসনে আরোহন করেন পুরুগুপ্ত হয়তো তাকে বাধা দিয়েছিলেন কিন্তু স্কন্দগুপ্ত সে প্রতিরোধ অগ্রাহ্য করে নিজের কর্তৃত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত করেন

ম্লেচ্ছদের বিরুদ্ধে জয়লাভ

স্কন্দগুপ্তের সিংহাসনে আরোহনের প্রায় অব্যবহিত পরই এক প্রবল প্রতিপক্ষ গুপ্তরাজ্য আক্রমন করে।। বহিঃশত্রুর আক্রমনে গুপ্তরাজ্যের অবস্থা সঙ্গীন হয়ে পড়ে। এই বহিঃশত্রুর আক্রমন প্রসঙ্গে ভিতরী লেখের প্রশস্তিকর বলেন, পিতার মৃত্যুর পর গুপ্তরাজ্যে বিপর্যয় দেখা দেয় কিন্তু স্কন্দগুপ্ত নিজের বাহুবলে শত্রুদের চূর্ন করে সে বিপর্যয় রোধ করেন কিন্তু ভিতরী লেখ থেকে এই বহিশত্রুদের পরিচয় সম্বন্ধে কিছু জানা যায় না কিন্তু স্কন্দগুপ্তের জুনাগড় লেখে ম্লেচ্ছ বলে যাদের উল্লেখ করা হয়েছে তারাই সম্ভবত এই বহিঃশত্রু কারা এই ম্লেচ্ছ তা অবশ্য সুনিশ্চিতরূপে জানা যায় না কালিদাসের রঘুবংশে রাজা রঘুর সঙ্গে যবনদের পারসিকদেশে সংঘর্ষের উল্লেখ আছে মনে হয়, ম্লেচ্ছ যবন পদ দুটির অর্থ একই জুনাগড় লেখে যাদের ম্লেচ্ছ বলা হয়েছে তারা কুষান বা পারসিক প্রথম কুমারগুপ্তের ঋত্যুর পর তারা সম্ভবত গুপ্তরাজ্য আক্রমন করেন কিন্তু স্কন্দগুপ্ত তাদের বিতাড়িত করেন

হুনদের বিরুদ্ধে বিজয়

স্কন্দগুপ্তের রাজত্বের শেষপর্বে মধ্য এশিয়া থেকে শ্বেতহুনরা দুর্বার গতিতে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। তাদের এই অগ্রগতি প্রতিরোধ করা সহজসাধ্য ছিল না। শ্বেতহুনরা যেমন সাহসী ছিলেন তেমনি তারা ছিলেন নিষ্ঠুর। তাদের নেতা এ্যটিলা সময় ইউরোপে ত্রাসের সঞ্চার করে। পূর্ব ইউরোপ বিশ্বস্ত করে তিনি সসৈন্যে রোমের উপকণ্ঠে উপনীত হন। রোমক সম্রাট তৃতীয় ভ্যালেনটিয়ান পলায়ন করে আত্মরক্ষা করেন। কিন্তু স্কন্দগুপ্ত সর্বশক্তি দিয়ে হুনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং হুনদেরকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন। স্কন্দগুপ্তের হাতে হুনদের পরাজয়ের পর হুনরা পারস্যে গিয়ে সেখানকার রাজাকে হত্যা করে পারস্য দখল করে। শ্বেতহুনরা স্কন্দগুপ্তের কাছে পরাজিত হওয়ার পর তাদের মনে এমন ভয়ের সঞ্চার হয় যে,

স্কন্দগুপ্তের মৃত্যুর বেশকিছুকাল পরও তারা আর ভারত আক্রমনের কথা দ্বিতীয়বার মাথায় আনেনি৷ শ্বেতহুনদের বিরুদ্ধে জয়লাভ যে স্কন্দগুপ্তের শ্রেষ্ঠকীর্তি ছিল একথা বলার অপেক্ষা রাখে না এই সাফল্যের পর স্কন্দগুপ্ত দ্বিতী চন্দ্রগুপ্তের অনুকরনেবিক্রমাদিত্য' উপাধি গ্রহন করেছিলেন

স্কন্দগুপ্ত পশ্চিমভারত

অনেকের বিশ্বাস, স্কন্দগুপ্ত রাজত্বের শেষদিকে রাজনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন এবং সাম্রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল তার হস্তচ্যুত হয়। এর পক্ষে বিপক্ষে উভয় যুক্তি দেখা যায়।

সপক্ষে যুক্তি-

এক, স্কন্দগুপ্তের রাজত্বের শেষপর্বের সব কটি লেখ উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে পাওয়া গেছে। এই সময়কার কোনো লেখই সাম্রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তে আবিস্কৃত হয়নি।

 দুই, প্রথম কুমারগুপ্ত সাম্রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জন্য বিভিন্ন ধরনের কতকগুলি মুদ্রার প্রচলন করেছিলেন। স্কন্দগুপ্ত তাঁর রাজত্বের শেষেরদিকে ঐসব মুদ্রার মধ্যে কিছু মুদ্রাকে প্রত্যাহার করে নেন৷

বিপক্ষে যুক্তি

প্রথম, স্কন্দগুপ্তের রাজত্বের শেষপর্বের কোন লেখ গুজরাতে আবিস্কৃত হয়নি ঠিকই, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাঁর আমলে গুজরাট গুপ্তরাজবংশের অধিনে ছিলে না। দ্বিতীয়ত, স্কন্দগুপ্ত প্রথম কুমারগুপ্তের কয়েকটি মুদ্রা প্রত্যাহার করে নিলেও তিনি নতুন ধরনের বেশ কিছু মুদ্রার প্রচলন ঘটান। যেমন- বৃষ বেদী শ্রেনীর মুদ্রা। এই মুদ্রাগুলি কচ্ছ কাম্বে উপসাগরীয় অঞ্চলে উৎকীর্ণ হয়েছিল। এছাড়াও গুজরাতে স্কন্দগুপ্ত প্রচলিত অনেক মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে। গুজরাতে পাওয়া মুদ্রাগুলির সবকটিই যে স্কন্দগুপ্তের রাজত্বকালের প্রথম পর্বে উৎকীর্ন হয়েছিল তার যথেষ্ট কোন প্রমান পাওয়া যায় না

এথেকে সিদ্ধান্ত করা যায় যে, তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে পশ্চিমে গুজরাত থেকে পূর্ব বাংলা পর্যন্ত যে ভুখন্ড লাভ করেছিলেন, অসংখ্য বাধা-বিপত্তি প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তা তিনি

অক্ষত রেখে যান৷

স্কন্দগুপ্ত পরবর্তী গুপ্ত রাজগন

পুরুগুপ্ত

স্কন্দগুপ্তের পর গুপ্তবংশের সিংহাসনে বসেন তাঁর ভাই পুরুগুপ্ত। পুরুগুপ্ত খুববেশীদিন রাজত্বকরেননি। তার কোন অভিলেখ বা মুদ্রা পাওয়া যায়নি। তাঁর সময়কালে প্রকাশাদিত্যের নামাঙ্কিত কিছু মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে তবে পুরুগুপ্ত যে প্রকাশাদিত্য উপাধি ধারন করেন এমন কোন প্রমান পাওয়া যায়নি

দ্বিতীয় কুমারগুপ্ত

৪৭৪ খ্রিস্টাব্দে পুরুগুপ্তের পুত্র দ্বিতীয় কুমার গুপ্ত গুপ্ত রাজবংশের সিংহাসনে আরোহন করেন। সারনাথে তার একখানি লেখ আবিস্কৃত হয়েছে। পুরুগুপ্ত দ্বিতীয় কুমার অত্যনত অযোগ্য শাসক ছিলেন। পুরুগুপ্ত দ্বিতীয় কুমারগুপ্তের আমল থেকেই গুপ্ত রাজবংশের ভাঙন শুরু হয়। প্রথম ভাঙন শুরু হু গুজরাত থেকে। সেনাপতি ভটার্ককে সম্ভবত স্কন্দগুপ্ত গুজরাটের প্রদেশপালরূপে নিযুক্ত করেছিলেন। ভটার্ক গুপ্তদের প্রতি অনুগত হলেও তার পুত্র পৌত্ররা কেন্তুঈয় শক্তির দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে গুজরাটে কার্যতস্বাধীন মৈত্রক রাজ্য স্থাপন করেন। মধ্যপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে বন্ধুবর্মা স্বাধীনতা ঘোষনা করেন

বুধগুপ্ত

৪৭৭ খ্রিস্টাব্দে গুপ্ত সাম্রাজ্যের নরপতিরূপে সিংহাসনে বসেন পুরুগুপ্তের আর এক পুত্র

বুধগুপ্ত স্কন্দগুপ্তের মৃত্যুর সাথে সাথে রাজ্যভাঙার যে খেলা শুরু হয়েছিল তা শক্ত হাতে প্রতিহত করার মত শক্তি বুধগুপ্তের ছিল না তার আমলে নিম্নলিখিত ঘটনাগুলি উল্লেখযোগ্য-

) বুন্দেলখন্ডে বাঘেলাখন্ডে মহারাজ হস্তীর নির্দেশে স্বাধীন পরিব্রাজক রাজ্যের উৎপত্তি হয়

) পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে জয়নাথ উচ্চকল্পরাজ্যের পত্তন করেন

) পান্ডুবংশীয় উদয়ন উত্তরপ্রদেশের বান্দ্রায় নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন

) মধ্যপ্রদেশের রেওয়া অঞ্চলে নাগবল তার পুত্র ভরতবল আর একটি পান্ডুবংশী রাজ্য স্থাপন করেন

) এমনকি মদ্যপ্রদেশের এরান অঞ্চলেও বুধগুপ্তের কর্তৃত্ব শিথিল হয়ে এসেছিল

 

স্কন্দগুপ্ত দ্বিতীয় পর্ব >>>>

 

ধন্যবাদ

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 

প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন

 টেলিগ্রাম গ্রুপ  যোগদান করার জন্য - Click Here

প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে

 - Click Here

মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে 

- Click Here

আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে

 - Click Here

 ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে  

- Click Here

 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad