স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন
Set by- Manas Adhikary
স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন প্রথম পর্ব। Bayakat Movement – I
ভারতের প্রথম গণআন্দোলন। স্বদেশী আন্দোলন। বয়কট আন্দোলন। স্বদেশী আন্দোলনের সময় কংগ্রেসের সভাপতি। সঞ্জীবনী পত্রিকা। স্বদেশী আন্দোলনের সূচনা। বয়কট এর প্রস্তাব। বন্দেমাতরম আন্দোলন। স্বদেশী আন্দোলনে মহিলাদের ভুমিকা। ভারতমাতা চিত্র। ‘স্বনিয়োজিত প্রচারক। বরিশালের মুকুটহীন রাজা। কার্লাইল সার্কুলার। পেডলার সার্কুলার। লায়ন সারকুলার। এন্টি সার্কুলার সোসাইটি। ডন সোসাইটি। জাতীয় শিক্ষা পরিষদ।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই, আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন। এই পর্বে থাকছে স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। পরবর্তী পর্বে আরও কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলচনা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন সংক্ষিপ্তরূপ। About Swadeshi Movement.
লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা প্রকাশিত হলে বাঙালি জাতি মনে করে যে, তাদের বিভক্ত করে দূর্বল করার উদ্দেশ্য ব্রিটিশ সরকার এই চক্রান্ত করেছেন। সুরেন্দ্রনাথ তাঁর বেঙ্গলি পত্রিকায় বলেন যে, ‘বঙ্গভঙ্গ একটি জাতীয় বিপর্যয়। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন দেখা দেয় তাকে দুটি পর্যয়ে ভাগ করা যায়, যথা- প্রথমে সভা, সমিতি ও আবেদনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জ্ঞাপন করা দ্বিতীয় পর্যায়ে বয়কট, স্বদেশী, আইনভঙ্গ এবং শেষ পর্যন্ত সহিংস আন্দোলন।
প্রথম পর্যায়ে বাংলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় দুইহাজার সভা অনুষ্ঠিত হয়। 1904 সালে মার্চ মাসে এবং 1905 সালের জানুয়ারী মাসে কলিকাতার টাউন হলে যে মহতী সভা হয় তাতে বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক প্রতিনিধি যোগ দেন। প্রায় 70 হাজার লোকের সহি সম্বলিত একটি আবেদনপত্র বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে বিলেতে ভারত সচিবের কাছে পাঠানো হয়। হিতবাদী, সঞ্জীবনী, সন্ধ্যা বিভিন্ন পত্রিকাগুলি বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার এসবে কর্নপাত না করায় ভারতীয় নেতৃবর্গ বুঝতে পারেন যে এগুলো দিয়ে কিছু হবে না। এই সময় কৃষ্ণকুমার মিত্র তাঁর সঞ্জিবনী পত্রিকায় বিলাতী পন্য বয়কটের ডাক দেন। ইংরেজরা ভারতে বিলাতী মাল বিক্রি করে যে মুনাফা লুটে নিয়ে যায় তা বয়কট করার ডাক দেওয়া হয়। বঙ্গভঙ্গ উপলক্ষে বাংলায় বিলাতী মাল বয়কটর আন্দোলন প্রকৃতপক্ষে কার্যকরী রূপ পায়। 1905 সালের 7 আগষ্ট কলিকাতার টাউন হলে এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিলাতী মাল বয়কটের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপর বাংলার সকল স্থানে বয়কট আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বিলাতী কাপড়, লবন, চিনি, সিগারেট, কাঁচের চুড়ি প্রভৃতি দ্রব্য বয়কট করা হয়। এই সময় চারণ কবি মুকুন্দ দাসের গান ‘ফেলে দাও রেশমী চুড়ি বঙ্গনারী’ বাংলার নারী সমাজকে অনুপ্রানিত করে। ক্রমে বয়কট আন্দোলন ইংরেজের প্রশাসন ও ইংরেজ সরকারের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে আরম্ভ হয়। ছাত্ররা স্কুল কলেজ থেকে বের হয়ে আসে। উকিল, ব্যারিষ্টার ইংরেজের আফিস-আদালত বয়কট করে প্রশাসন অচল করে দেওয়ার চেষ্টা করে।
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন ক্রমে স্বদেশী আন্দোলনে পরিনত হয়। সকলেই বুঝতে পারেন যে, শুধুমাত্র বয়কট করলেই হবে না, বিলাতী জিনিস ব্যবহার বন্ধ করলে যে অভাব দেখা দেবে তার পরিপূরক হিসাবে স্বদেশী জিনিস অর্থাৎ ভারতে তৈরী জিনিস ব্যবহার করা দরকার। এর দ্বারা স্বদেশী শিল্পের প্রসার ঘটবে এবং বিলাতী জিনিসের অভাবো ঘুচবে। স্বদেশী প্রচারের ফলে লোকে মোটা তাঁতের কাপড়, আমেদাবাদ, বোম্বাইয়ের মিলের তৈরী কাপড় পরতে থাকে। বিলাতী চিনির স্থলে দেশীয় চিনি ও গুড় ব্যবহার করতে থাকে। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় এই সময় দেশীয় ঔষধের কারখানা বেঙ্গল কেমিক্যাল স্থাপন করেন। কলিকাতায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ নামে একটি দেশীয় হাসপাতাল তৈরী হয়। জামসেদজী টাটা এইসময় দেশীয় লোহার কারখানা টাটা কোম্পানী স্থাপন করেন। সতীশচন্দ্রের ডন পত্রিকা স্বদেশী শিক্ষা ও স্বদেশী ভাব প্রচারে অগ্রনী ছিল। শ্রী অরবিন্দ
ঘোষ বরোদার কলেজের অধ্যক্ষের পদ ছেড়ে জাতীয় কলেজের অধ্যক্ষের পদ নেন। বঙ্গীয় কারিগরী বিদ্যালয় নামে এক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়, যেটির পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত হয়।
বাঙালীর এতকিছু প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে 1905 সালের 16 অক্টোবর লর্ড কার্জন বঙ্গ ব্যবচ্ছেদ কায়েম করে। সমগ্র বাঙালী জাতি এই রাজনৈতিক আস্ত্রাঘাতের বেদনায় শিউরে উঠে। বেদনা হতে জাগে ক্রোধ ও প্রতিজ্ঞা। 16 অক্টোবর বাঙালী জাতি রাখীবন্ধন উৎসব দ্বারা হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ও দুই বাংলার ঐক্যের শপথ নেয়। এই দিন বাঙালী জাতি অরন্ধন পালন করে। সরকার বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন দমনের জন্য প্রচন্ড দমন নীতি গ্রহন করে। কার্লাইল সারকুলার দ্বারা ছাত্রদের দমনের ব্যবস্থা করা হয়। বহু ছাত্র স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেপ্তার ও মারধর করা হয়।
স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন দ্বিতীয় পর্ব>>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
ভারতের প্রথম গণআন্দোলন। স্বদেশী আন্দোলন। বয়কট আন্দোলন। স্বদেশী আন্দোলনের সময় কংগ্রেসের সভাপতি। সঞ্জীবনী পত্রিকা। স্বদেশী আন্দোলনের সূচনা। বয়কট এর প্রস্তাব। বন্দেমাতরম আন্দোলন। স্বদেশী আন্দোলনে মহিলাদের ভুমিকা। ভারতমাতা চিত্র। ‘স্বনিয়োজিত প্রচারক। বরিশালের মুকুটহীন রাজা। কার্লাইল সার্কুলার। পেডলার সার্কুলার। লায়ন সারকুলার। এন্টি সার্কুলার সোসাইটি। ডন সোসাইটি। জাতীয় শিক্ষা পরিষদ।