বঙ্গভঙ্গ
Set by- Manas Adhikary
বঙ্গভঙ্গ প্রথম পর্ব। Partition of Bengal– I.
বঙ্গভঙ্গ। বঙ্গভঙ্গের সময় কংগ্রেসের সভাপতি। বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব। রিজলী প্রস্তাব। বাংলায় শোক দিবস। রাখীবন্ধন দিবস। স্বদেশী ভান্ডার। ভারতমাতা চিত্র। বঙ্গভঙ্গের পর পূর্ব বাংলার প্রথম গভর্নর। বঙ্গভঙ্গ রদ। বঙ্গভঙ্গ রদ এর সময় ভারতের ভাইসরয়।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই, আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো বঙ্গভঙ্গ। এই পর্বে থাকছে বঙ্গভঙ্গ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। পরবর্তী পর্বে কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলচনা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
বঙ্গভঙ্গ সংক্ষিপ্তরূপ। About Bango Vango.
1898 খ্রিষ্টাব্দে লর্ড কার্জন ভারতের গভর্নর নিযুক্ত হয়ে আসার পর ভারতীয় জাতীয়তাবাদের পীঠস্থান বাংলাকে দ্বিখন্ডিত করে ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করতে সচেষ্ট হন। 1905 খ্রীষ্টাব্দের 19 জুলাই তিনি এক আদেশ বলে বাংলাকে দ্বিখন্ডিত করে 'পূর্ববঙ্গ ও আসাম' নামে একটি পৃথক প্রদেশ গঠন করার সিদ্ধান্ত ঘোষনা করেন। লর্ড কার্জনের আমলে এই সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষিত হলেও তিনি এই নীতির উদ্ভাবক ছিলেন না। তখন বাংলা বলতে বোঝাত অখন্ড বঙ্গদেশ, বিহার, ওড়িশা ও ছোটনাগপুর অঞ্চল। 1874 খ্রিষ্টাব্দে তিনটি বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চল গোয়ালপাড়া, কাছাড় এবং শ্রীহট্টকে নিয়ে আসাম নামে একটি পৃথক প্রদেশ গঠিত হয়। 1896 খ্রিষ্টাব্দে আসামের চীফ কমিশনার স্যার উইলিয়াম ওয়ার্ড চট্টগ্রাম, ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলাকে আসামের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দেন। প্রবল বিরোধিতার জন্য তাঁর সেই প্রস্তাব বাতিল হয়। হেনরি কটনও এটিকে অবাস্তবও অসংগত বলে মন্তব্য করে। ফলে প্রস্তাবটি তখনকার মতো বাতিল হয়। 1903 খ্রীষ্টাব্দে ভারতের তদানীন্তন স্বরাষ্ট্র সচিব এইচ এইচ রিজলী উইলিয়াম ওয়ার্ডের প্রস্তাবকে আরও সম্প্রসারিত করে বঙ্গভঙ্গের এক নতুন পরিকল্পনা প্রনয়ন করেন। এতে বলা হয় চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ জেলাকে আসামের সঙ্গে যুক্ত করে পূর্ববঙ্গ ও আসাম নামে একটি নতুন প্রদেশ গঠিত হবে। উড়িয়া ভাষি অঞ্চলকে বাংলার অবশিষ্টাংশের সঙ্গে যুক্ত করা হবে এবং ছোটনাগপুরকে মধ্যপ্রদেশের সাথে যুক্ত করা হবে। লর্ড কার্জন রিজলীর এই প্রস্তাবকে কিছুটা পরিবর্তিত আকারে গ্রহন করেন যা বাংলার মানুষের পক্ষে হয়েছিল আরও মারাত্মক। পরিবর্তিত এই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিভাগ, মালদহ, পার্বত্য ত্রিপুরা ও আসামকে একত্রিত করে 'পূর্ববঙ্গ ও আসাম' নামে একটি নতুন প্রদেশ গঠিত হবে যার রাজধানী হবে ঢাকা। অপরপক্ষে বাংলার অবশিষ্টাংশ, বিহার ও ওড়িশার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গঠিত হবে 'বঙ্গদেশ' যার রাজধানী হবে কলকাতা। বাংলা তথা ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের কাছে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা ছিল একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ, কারন ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দূর্বল করার জন্যই মূলত বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। 1905 খ্রিষ্টাব্দের 16 অক্টোবর থেকে বঙ্গ-ভঙ্গের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।
বঙ্গভঙ্গের উদ্দেশ্যঃ-
১) বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্তের সমর্থনে ব্রিটিশ সরকারের যুক্তি ছিল যে, বাংলা বিহার ও ওড়িশা নিয়ে গঠিত অখন্ড বাংলার বিশাল অঞ্চল শাসন করা একজন গর্ভনরের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন। তাই প্রশাসনিক সুবিধার জন্য এবং পিছিয়ে পড়া মুসলিম ও উড়িয়াভাষীদের উন্নয়নের প্রয়োজনে বঙ্গবিভাজন অপরিহার্য।
২) উনিশ শতকে বাংলা চরমপন্থী জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও রাজনৈতিক কাজকর্মের প্রধান কেন্দ্র হওয়ায় ব্রিটিশ স্বার্থের পক্ষে বিপজ্জনক ছিল। এই আন্দোলনের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে লর্ড কার্জন ভারতবর্ষের অন্যান্য অঞ্চলকে মুক্ত রাখতে চেয়েছিলেন। বাংলাকে দ্বিখন্ডিত করার মাধ্যমে তৎকালীন বাংলার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করে দেওয়াই ছিল লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনার মুখ্য উদ্দেশ্য।
৩) বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে পশ্চিমবাংলার সঙ্গে বিহার ও উড়িষ্যাকে পশ্চিমবাংলার জাতীয়তাবাদী চেতনাযুক্ত হিন্দু বাঙালিদের ওড়িয়া ও বিহারীদের সংখ্যা গরিষ্ঠতার চাপে নতজানু করা এবং পূর্ব বাংলার সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়কে নতুন প্রদেশ দান করে অনুগত রাখা ছিল লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য। অর্থ্যাৎ বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে অবিভক্ত বাংলাকে ভাগ করে বাংলার হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করাই ছিল ব্রিটিশ সরকারের আর এক অন্যতম উদ্দেশ্য।
৪) তৎকালীন ভারতবর্ষে রাজনৈতিক চিন্তাধারা, সচেতনতা ও বুদ্ধিবৃত্তিতে বাঙালিরা ছিল অগ্রগন্য, এছাড়া ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বও তখন ছিল বাঙালিদের হাতে। তাই বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে বাঙালিকে দুর্বল করে জাতীয় কংগ্রেস তথা ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে ধ্বংস করাই ছিল লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য।
বঙ্গভঙ্গ দ্বিতীয় পর্ব>>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
বঙ্গভঙ্গ। বঙ্গভঙ্গের
সময় কংগ্রেসের সভাপতি। বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব। রিজলী প্রস্তাব। বাংলায়
শোক দিবস। রাখীবন্ধন
দিবস। স্বদেশী ভান্ডার। ভারতমাতা চিত্র। বঙ্গভঙ্গের পর পূর্ব বাংলার
প্রথম গভর্নর। বঙ্গভঙ্গ রদ। বঙ্গভঙ্গ রদ এর সময় ভারতের ভাইসরয়।