মুসলীম লীগ ও মহম্মদ জিন্নাহ
Set by- Manas Adhikary
মুসলীম লীগ ও মহম্মদ জিন্নাহ প্রথম পর্ব। Muslim League & Muhammad Ali Jinnah – I
মহম্মদ জিন্নাহ। মুসলীম লীগ। মহম্মদ আলি জিন্না। মুসলীম লীগের প্রতিষ্ঠা। মুসলীম লীগের উদ্দেশ্য। চৌদ্দ দফা দাবি। পাকিস্তান প্রস্তাব।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই, আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো মুসলীম লীগ ও মহম্মদ জিন্নাহ। এই পর্বে থাকছে মুসলীম লীগ ও মহম্মদ জিন্নাহ সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা । পরবর্তী পর্বে কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলচনা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
মুসলীম লীগ ও মহম্মদ জিন্নাহ সংক্ষিপ্তরূপ। About Muslim League & Muhammad Ali Jinnah.
মুসলীম লীগ 1906 সালের ডিসেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠিত একটি রাজনৈতিক দল। শুরুতে আগা খান এবং চুড়ান্ত পর্যায়ে মহম্মদ আলি জিন্না কর্তৃক পরিচালিত এ দলটি মুসলিম জাতীয়তাবাদের পক্ষে জনসমর্থন তৈরিতে এবং অবশেষে 1947 সালে পাকিস্তান সৃষ্টির ক্ষেত্রে মুল ভুমিকা পালন করে। স্যার সৈয়দ আহমেদ খান ভারতীয় মুসলিমদেরকে জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করতে নিষেধ করেন। তিনি মনে করতেন ইংরেজদের সাথে সংঘাতে গিয়ে বা তাদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলে কোনোভাবেই কোন কিছুই করা সম্ভব নহে। পরিবর্তে আনুগত্যের মাধ্যমে সুযোগ-সুবিধা লাভের পরিপন্থী ছিলেন তিনি। এই মুসলীম লীগ বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের বিরোধীতা করেন। বঙ্গভঙ্গের গোড়া সমর্থক ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ কংগ্রেস সমর্থকদের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী বিক্ষোভ মোকাবিলা করার জন্য একটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। ভারতীয় মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষনের উদ্দেশ্যে তিনি এ সভায় একটি রাজনৈতিক মঞ্চ গঠনের প্রস্তাব করেন। সভার সভাপতি নওয়াব ভিকার-উল-মুলক প্রস্তাবটি সমর্থন করেন এবং এভাবে সর্ব ভারতীয় মুসলীম লীগ সৃষ্টি হয়। সর্ব ভারতীয় মুসলিম লীগের উদ্দেশ্যাবলি ছিল মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষন করা, ব্রিটিশ সরকারের প্রতি মুসলমানদের আনুগতা বৃদ্ধি করা, ভারতীয় অন্যান্য সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তোলা। এই লীগ প্রতিষ্ঠার তাৎক্ষনিক উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গভঙ্গ রদের জন্য হিন্দুদের শক্তিশালী বিক্ষোভের বিরুদ্ধে উপমহাদেশের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
মহম্মদ জিন্নাহ লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে এসে মুসলীম লীগের সভাপতির পদ গ্রহন করেন। 1937 সালের নির্বাচনে মোট নটি প্রদেশে মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত 482 টি আসনের মধ্যে মুসলীম লীগ 104 টি আসন দখল করে। এর মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাতেই পেয়েছিল 36 টি আসন। আইন সভায় মুসলীম লীগ দ্বিতীয় (কংগ্রেসের পর) বৃহত্তম দল হিসাবে বিবেচিত হয়। মনে করা হয় যে, বাংলায় মুসলীম লীগের বিজয়ের কারন ছিল পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত মুসলমান পেশাদার ও মুসলমান ভুমি মালিক সম্প্রদায়ের যৌথ সমর্থনের ফল। 1937 সালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ.কে. ফজলুল হক মুসলীম লীগে যোগদান করলে তাঁর মন্ত্রীসভা তথা বাংলা মুসলীম লীগের দূর্গে পরিনত হয়। এই সময় তিনি মুসলীম লীগের মঞ্চ থেকে লাহোর প্রস্তাব ঘোষনা করেন। লাহোর প্রস্তাবের ছয় বছর পর সোহরাবর্দী আইন সভায় মুসলমান সদস্যদের দিল্লী কনভেনশনে একটি মুসলমান' রাষ্ট্রের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। 1947 সালের 14 আগষ্ট স্বাধীনতা অর্জিত হলে মুসলিম লীগ ভারতীয় মুসলমানদের প্রায় সকলের সংগঠনে পরিনত হয়।
মহম্মদ জিন্নাহ
মহম্মদ আলি জিন্না করাচিতে জন্মগ্রহন করেন। তিনি লন্ডনের লিঙ্কনস ইন থেকে ব্যারিষ্টার হন। বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে তিনি হিন্দু-মুসলীম ঐক্যের ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে ওঠেন। কংগ্রেস ও মুসলীম লীগের মধ্যে যে লখনউ চুক্তি হয় সেক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা গ্রহন করেন। হোমরুল আন্দোলন সংগঠনে তিনি অন্যতম প্রধান নেতা হয়ে ওঠেন। মুসলিমদের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য তিনি চৌদ্দ দফা দাবি পেশ করেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহ আন্দোলনে অংশ নিলে তিনি ১৯২০ সালে কংগ্রেস ত্যাগ করেন। 1940 সালে লাহোরে মুসলীম লীগের ঐতিহাসিক অধিবেশন বসে। এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জিন্নাহ। এই অধিবেশনে সভাপতি জিন্না সাহেব ঘোষনা করেন যে –
১) ভারতে হিন্দু ও মুসলিম হলেন দুই পৃথক জাতি। ভারতীয় বলে কোন জাতি নেই।
২) ভারতের যে প্রদেশে মুসলিমরা সংখ্যাগুরু সেই প্রদেশগুলিকে নিয়ে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গড়তে হবে।
৩) সেই রাষ্ট্রের অন্তর্গত প্রদেশগুলি স্বায়ত্বশাসনের অধিকার লাভ করবে এবং সেই রাষ্ট্র সার্বভৌম ক্ষমতা ভোগ করবে।
এই প্রস্তাব পাঞ্জাবের স্যার সিকান্দার হায়াৎ খান রচনা করেন, ফজলুল হক উত্থাপন করেন এবং খালিকুজ্জমান সমর্থন করেন। এই প্রস্তাবটিকে 'পাকিস্তান প্রস্তাব' বলা হয়। যদিও এই প্রস্তাবে 'পাকিস্তান' কথাটি ব্যবহার করা হয়নি তথাপি প্রস্তাবটির অর্ন্তনিহিত অর্থ ছিল পাকিস্তান দাবী।
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
মহম্মদ জিন্নাহ। মুসলীম লীগ। মহম্মদ আলি জিন্না। মুসলীম লীগের প্রতিষ্ঠা। মুসলীম লীগের উদ্দেশ্য। চৌদ্দ দফা দাবি। পাকিস্তান প্রস্তাব।