কেশবচন্দ্র সেন
Set by – Manas Adhikary
কেশবচন্দ্র সেন প্রথম পর্ব। Keshab Chandra Sen Part – I .
কেশবচন্দ্র সেন। ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ। ব্রহ্মানন্দ উপাধি। বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধকরণ আইন। নববিধান ব্রাহ্মসমাজ। ইন্ডিয়ান মিরর। বামাবোধিনী। মদ না গরল। নেটিভ ম্যারেজ অ্যাক্ট।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সমাজ সংস্কারক কেশবচন্দ্র সেন। এই পর্বে থাকছে কেশবচন্দ্র সেন। সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা। পরবর্তী পর্বে কেশবচন্দ্র সেন কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
কেশবচন্দ্র সেন সংক্ষিপ্তরূপ। About Keshab Chandra Sen.
কেশবচন্দ্র সেন উনিশ শতকের বাংলা নবজাগরনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি একজন ব্রাহ্ম নেতা ও ধর্মসংস্কারকই কেবল ছিন না, জাতিয় চেতনা ও জাতীয়তাবোধ উন্মেষে তিনি অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৮৩৮ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতার এক বৈষ্ণব কায়স্থ পরিবারে কেশবচন্দ্রের জন্ম হয়। তাঁর ঠাকুরদা রামকমল সেন ছিলেন এশিয়াটিক সোসাইটির প্রথম ভারতিয় সম্পাদক। কেশবচন্দ্র সেন হিন্দু কলেজের ছাত্র হওয়ার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই জেমস লং, চার্লস ডাল প্রভৃতি মিশনারি প্রচারকদের সংস্পর্শে আসেন ও তাঁর মনে ভক্তিবাদী ঈশ্বর চিন্তার এক গভীর শিকড় বিকাশ লাভ করে।
কেশবচন্দ্র ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যসোসিয়েশানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এছাড়াও তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। বেঙ্গল ব্যাঙ্কের করনিক হিসাবে স্বল্প সময়ের জন্য নিযুক্ত ছিলেন। ক্রমেই তাঁর মনে ক্রমশই ধর্মচিন্তা ও ধর্ম সংগঠনের ইচ্ছা প্রবল হয়ে উঠতে থাকে। ১৮৫৭ সালে তিনি ব্রাহ্ম সমাজে যোগদান করেন। এই সময় থেকেই কেশবচন্দ্র ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র 'ইন্ডিয়ান মিরর' এ নিজের লেখা প্রকাশ করতে থাকে। ১৮৬২ সালের ১৩ এপ্রিল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কেশবচন্দ্র সেনকে ব্রহ্মসমাজের আচার্য রূপে নিযুক্ত করেন এবং উপাধি দেন ‘ ব্রহ্মানন্দ'। কিন্তু অচিরেই কেশবচন্দ্র সেনের সাথে দেবেন্দ্রনাথের মতান্তর দেখা দেয়। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ছিলেন উপনিষদের ভাবধারায় গভীরভাবে বিশ্বাসী। ব্রাহ্মধর্ম তাঁর কাছে ছিল ‘হিন্দুধর্মেরই এক বিশুদ্ধ রূপ’। তাই বর্ণপ্রথা, জাতিভেদপ্রণ ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর সনাতনপন্থী দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে কেশবচন্দ্রের প্রগতিশীল ও খ্রিষ্টীয় আদর্শের সনাতনী ভাবধারার সংঘাত ঘটে। ফলত, আদি ব্রাহ্মসমাজ পরিত্যাগ করে কেশবচন্দ্র সেন ১৮৬৮ সালে 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' প্রতিষ্ঠা করেন।
এই সময় থেকেই কেশবচন্দ্র বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে নিহিত ভক্তি ও মিলনের বিষয়টি ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের প্রধান দিক হিসাবে তুলে ধরেন। কেশবচন্দ্র সেনের ধর্মপ্রচারের অন্যতম অভিনব ও জনপ্রিয় পদ্ধতি ছিল কীর্তন। কলকাতা ছাড়িয়ে বাংলার মফস্বলে ও গ্রামে এর ফলে ব্রহ্মধর্মের প্রভাব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৭০ সালে কেশবচন্দ্র ধর্মপ্রচার ও ধর্মসমালোচনার লক্ষ্যে ইংল্যান্ডে যান। সেখান থেকে ফিরেই তিনি নানাধরনের সামাজিক সংস্কার ও কর্মে নিজেকে নিয়োজিত করেন যার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ন কাজটি ছিল চোদ্দ বছরের কমবয়সী বালিকাদের বিবাহ নিষিদ্ধ করা। এছাড়াও কেশবচন্দ্র এইসময় 'ভারত 'আশ্রম' প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৭৮ সালে কেশবচন্দ্র সেন তাঁর নাবালক (চোদ্দ বছরের কম) কন্যা সুনীতির বিবাহ দেন কোচবিহারের নাবালক যুবরাজের সাথে। কেশবচন্দ্র সেনের ব্রাহ্মসমাজের ধর্মীয় ও সামাজিক আদর্শের এই চরম লঙ্ঘন ব্রাহ্মযুবদের অত্যন্ত ক্ষুব্ধ করে তোলে। ফলে ব্রাহ্মসমাজের এক বিরাট অংশের সদস্য ব্রাহ্মসমাজ থেকে পদত্যাগ করে ‘সাধারন ব্রাহ্মসমাজ' গঠন করেন। এই ঘটনার পর কেশব চন্দ্র সেন অল্পদিন জীবিত ছিলেন। জীবনের শেষ পর্বে তাঁর ধর্মভাবনায় এক বিরাট পরিবর্তন দেখা দেয়।এইসময় তাঁর যোগাযোগ ঘটে রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের সাথে। রামকৃষ্ণের বানী জনমানসে ছড়িয়ে দিতেও উদ্যোগী হন কেশবচন্দ্র সেন। ১৮৮৪ সালের ৮ জানুয়ারীতে তাঁর মৃত্যু হয়।
কেশবচন্দ্র সেন দ্বিতীয় পর্ব>>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
কেশবচন্দ্র সেন। ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ। ব্রহ্মানন্দ উপাধি। বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধকরণ আইন। নববিধান ব্রাহ্মসমাজ। ইন্ডিয়ান মিরর। বামাবোধিনী। মদ না গরল। নেটিভ ম্যারেজ অ্যাক্ট।