ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
Set by- Manas Adhikary
কংগ্রেস প্রথম পর্ব। Indian National Congress Part – I.
জাতীয় কংগ্রেস। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা। গোকুলদাস তেজপাল কলেজ। ডাফরিন। হিউম। বঙ্গভঙ্গের সময় কংগ্রেস সভাপতি। মুসলীম গঠনের সময় কংগ্রেস সভাপতি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় কংগ্রেস সভাপতি। আইন অমান্য আন্দোলন / প্রথম গোলটেবিল বৈঠক এর সময় কংগ্রেস সভাপতি। ভারতের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির সময় কংগ্রেস সভাপতি।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই, আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সর্বশ্রেষ্ঠ দল জাতীয় কংগ্রেস। এই পর্বে থাকছে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও বিশেষ বিশেষ সময়ে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতিদের নাম। পরবর্তী পর্বে জাতীয় কংগ্রেসের বিশেষ বিশেষ অধিবেশন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
জাতীয় কংগ্রেস ও বিশেষ বিশেষ সময়ের সভাপতি। About Indian National Congress.
1885 সালের ডিসেম্বর মাসে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ রাজকর্মচারী অ্যালন অক্টেভিয়ান হিউমের উদ্যোগে ও বড়লাট ডাফরিনের অনুকুল্যে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন হয় বম্বে শহরের গোকুলদাস তেজপাল কলেজে। স্বভাবতই রাজানুকুলো সৃষ্ট কংগ্রেসের প্রকৃতি সুচনায় ছিল সীমিত, দ্বিধাগ্রস্ত ও মৃদু বা নরমপন্থী। বোম্বাইয়ের প্রথম অধিবেশন থেকে মাদ্রাজের তৃতীয় অধিবেশন পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে সরকারী মহলের সম্প্রীতি ছিল। উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীদেরকে দেখা যেত প্রতিটি কংগ্রেস অধিবেশনে অংশগ্রহন করতে। এমন কি কলকাতায় দ্বিতীয় অধিবেশন চলার সময় স্বয়ং বড়লাট ডাফরিনকংগ্রেস সদস্যদের চা পানে অভ্যর্থিত করেছিলেন। দেখাদেখি মাদ্রাজের গভর্নরও 1887 সালে কংগ্রেস সদস্যদের অ্যাপায়ন করেন। কিন্তু এর একবছর পরেই 1888 সালে দেখা গেল কংগ্রেসের কাজকর্মে ডাফরিন আর খুশি নয়। ঐ বছর তিনি ভারতবর্ষ থেকে বিদায় নেবার সময় সাফ জানিয়ে দেন সমস্ত ভারতবর্ষের হয়ে কথা বলার অধিকার কংগ্রেসের নেই; কংগ্রেস ভারতবর্ষের সমগ্র জনসাধারনের প্রতিনিধিমূলক প্রতিষ্ঠান নয় বরং কংগ্রেসের ইংরেজী-শিক্ষিত নেতৃবর্গ ভারতবর্ষের বিশাল জনগনের পরিপ্রেক্ষিতে একটা মুষ্টিমেয় সম্প্রদায় মাত্র যাকে অনুবীক্ষনের সাহায্যছাড়া দেখা যায় না। সরকারের তরফ থেকে জাতীয়তাবাদীদেরকে বলা হতে লাগল ‘অকৃতজ্ঞ বাবু', 'দেশদ্রোহী ব্রাহ্মন',। কংগ্রেস দলকে বলা হল দেশদ্রোহিতার কারখান। ওকালতিতে সুবিধা করতে পারেনি ও কোন গুরুত্বপূর্ন পদে প্রবেশ না করতে পেরে একদল মানুষ এই কংগ্রেস দল গঠন করেছে বলে ভারত সরকার প্রচার শুরু করল। ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন পর্যন্ত সময়কালকে জাতীয় কংগ্রেসের আদিপর্ব বলা হয়। এই আদিপর্বের নেতাদেরকে নরমপন্থী বলা হয়। এইসব নরমপন্থী নেতাদের মধ্যে দাদাভাই নৌরজী, বদরুদ্দীন তৈয়বজী, ফিরোজশাহ মেহতা, আনন্দ চারলু, গোপালকৃষ্ণ গোখলে, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী, আনন্দমোহন বসু রমেশচন্দ্র দত্ত প্রমুখ। এইসব নেতৃবৃন্দ উদার নৈতিক ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁরা মনেপ্রানে এই ধারনা পোষন করতেন যে, ব্রিটিশ শাসনই ভারতের পক্ষে মঙ্গলজনক। এই কারনে তাঁরা ভারতীয়দের দাবিদাওয়া প্রত্যক্ষ আন্দোলনের মাধ্যমে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিবর্তে ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন নিবেদন নীতি নিয়ে চলার পক্ষে মত পোষণ করতেন। এই আবেদন-নিবেদন নীতিকে কেউ কেউ রাজনৈতিক ভিক্ষাবৃত্তির সামিল বলে মন্তব্য করেছেন। ভারতীয়দের দাবিদাওয়ার প্রতি ব্রিটিশ সরকারের নিরবিচ্ছিন্ন উপেক্ষার ফলে ব্রিটিশ সরকারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কংগ্রেসের বেশকিছু নেতা সন্দিহান হয়ে ওঠেন। তাঁরা পূর্বের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন, ইংরেজদের উদারতা ও ন্যায়পরায়নতার প্রতি ক্রমশ আস্থা হারাতে থাকেন। ফলে কংগ্রেসের নরম পন্থী নেতৃবৃন্দের সাথে তাঁদের সংঘাত চরমে ওঠে। এদেরকে চরমপন্থী বলা হয়। বাস্তবিক পক্ষে কংগ্রেসের প্রথম যুগে জাতীয়তাবাদী নেতারা যেসব সংস্কার প্রবর্তনের জন্য আন্দোলন করেছিলেন, সেগুলির মধ্যে সরকার খুবই কম সংখ্যক রূপায়িত করেছিলেন। ঔপনিবেশিক শোষনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও নরমপন্থীরা দেশের দুঃখ দারিদ্রপীড়িত, জাতপাত ও কুসংস্কারের বেড়াজালে আবদ্ধ অশিক্ষিত ভারতবাসীর উন্নতির জন্য কোনো কার্যকর ভুমিকা গ্রহন করতে পারেনি। ফলে জাতীয় কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা হ্রাস হতে দেখা যায়। 1893-1894 সালে অরবিন্দ ঘোষ বোম্বাই এর ইন্দুপ্রকাশ পত্রিকায় লেখেন ‘কংগ্রেস ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় পৌঁছেছে’। এই অবস্থায় চরমপন্থী নেতৃবৃন্দ সরকার বিরোধীতা এবং সরকারি নীতির সমালোচনার পাশাপাশি দেশকে আত্মনির্ভরশীল করে তোলার ওপর জোর দেন। তাঁদের প্রচেষ্টায় ভারতবর্ষে বিশেষ করে বাংলার মানুষ আত্মনির্ভরশীল হতে শেখেন। বিশ শতকের শুরুতে স্বদেশি আন্দোলনের পাশাপাশি দেশে চরমপন্থী আন্দোলনও শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। জাতীয় কংগ্রেসের প্রতি শাসকবর্গের বিমাতৃসুলভ মনোভাব, দেশীয় জনসাধারনের প্রতি চরম অবহেলা এবং ঔদাসীন্য চরমপন্থী নেতৃবৃন্দকে ক্রমশ আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য করে। কংগ্রেসের মধ্যে নরমপন্থীদের প্রভাব কমতে থাকে এবং চরমপন্থীদের প্রভাব বাড়তে থাকে। অবশ্য 1916 সালের লখনউ অধিবেশনে অম্বিকাচরন মজুমদারের সভাপতিত্বে নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের মতপার্থক্য দুরীকৃত হয়।
বিশেষ বিশেষ সময়ের কংগ্রেস সভাপতি
১) বঙ্গভঙ্গের সময় কংগ্রেস সভাপতি
– গোপালকৃষ্ণ গোখলে
২) মুসলীম গঠনের সময় কংগ্রেস সভাপতি
- দাদাভাই নৌরজী
৩) মলে-মিন্টো সংস্কার / Indian Council Act এর সময় কংগ্রেস সভাপতি
- মদনমোহন মালভ্য
৪) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় কংগ্রেস সভাপতি
- ভূপেন্দ্রনাথ বোস
৫) জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলীম লীগের যৌথ অধিবেশনে সভাপতি
- অম্বিকা চরন মজুমদার
৬) জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড / প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাধি/ রাওলাট আইন/ভারত শাসন আইন/মন্টেও চেমসফোর্ড আইন এর সময় কংগ্রেস সভাপতি
- মতিলাল নেহেরু
৭) অসহযোগ আন্দোলন খিলাফৎ আন্দোলন এর সময় কংগ্রেস সভাপতি
- চিত্তরঞ্জন দাশ (কার্যনির্বাহী সভাপতি – হাকিম আজমল খান)
৮) সাইমন কমিশন আগমনের সময় কংগ্রেস সভাপতি
- মুক্তার আহমেদ আনসারি
৯) আইন অমান্য আন্দোলন / প্রথম গোলটেবিল বৈঠক এর সময় কংগ্রেস সভাপতি
- জে এল নেহেরু
১০) দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকের সময় কংগ্রেস সভাপতি
- বল্লভভাই প্যাটেল
১১) ভারত শাসন আইনের সময় কংগ্রেস সভাপতি
- রাজেন্দ্র প্রসাদ
(১২) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কংগ্রেস সভাপতি
- সুভাষ চন্দ্র বসু
১৩) নৌবিদ্রোহ/ক্যাবিনেট মিশন / গনপরিষদ গঠন / ভারতের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির সময় কংগ্রেস সভাপতি
- জে বি কৃপালিনি
১৪) ভারতের সংবিধান গ্রহন ও কার্যকর হবার সময় কংগ্রেস সভাপতি
- পুরুষোত্তম ট্যান্ডন
জাতীয় কংগ্রেস দ্বিতীয় পর্ব >>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
জাতীয় কংগ্রেস। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা। গোকুলদাস তেজপাল কলেজ। ডাফরিন। হিউম। বঙ্গভঙ্গের সময় কংগ্রেস সভাপতি। মুসলীম গঠনের সময় কংগ্রেস সভাপতি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় কংগ্রেস সভাপতি। আইন অমান্য আন্দোলন ও প্রথম গোলটেবিল বৈঠক এর সময় কংগ্রেস সভাপতি। ভারতের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির সময় কংগ্রেস সভাপতি।