থিওজফিক্যাল সোসাইটি ও অ্যানি বেসান্ত
Set by – Manas Adhikary
থিওজফিক্যাল সোসাইটি ও অ্যানি বেসান্ত প্রথম পর্ব। ANNIE BESANT Part – I.
অ্যানি বেসান্ত। থিওসফিক্যাল সোসাইটি। হোমরুল আন্দোলন। কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি। সেন্ট্রাল হিন্দু কলেজ। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতের প্রথম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। মাদ্রাজ হিন্দু অ্যাসোসিয়েশান।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের থিওজফিক্যাল সোসাইটি ও অ্যানি বেসান্ত। এই পর্বে থাকছে থিওজফিক্যাল সোসাইটি ও অ্যানি বেসান্ত সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা। পরবর্তী পর্বে থিওজফিক্যাল সোসাইটি ও অ্যানি বেসান্ত কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো।পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
থিওজফিক্যাল সোসাইটি ও অ্যানি বেসান্ত সংক্ষিপ্তরূপ। About ANNIE BESANT.
উনিশ শতকের শেষার্ধে ভারতের সংস্কার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা গ্রহন করে ‘থিওজফিক্যাল সোসাইটি’। হেলেনা পেট্রোভনা মাদাম ব্লাভটস্কি নামে এক রুশ মহিলা ও কর্নেল হেনরি স্টিল ওলকট নামে এক ব্রিটিশ সামরিক অফিসার1875 সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে থিওজফিক্যাল সোসাইটি স্থাপন করেন। 1879 সালে তাঁরা আর্য সমাজের আমন্ত্রনে ভারতে আসেন ও মাদ্রাজের উপকন্ঠে আডিয়ারে থিওজফিক্যাল সোসাইটির ভারতীয় শাখাটি 1886 সালে স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে এটিই সোসাইটির প্রধান কার্যালয়ে পরিনত হয়। ইংরেজি শব্দ 'থিওজফি'-র অর্থ হল ‘ঈশ্বর সম্পর্কে জ্ঞান’, বাংলা বা সংস্কৃতে যা ‘ব্রহ্ম জ্ঞান' হিসাবে পরিচিত। খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে গ্রিক পন্ডিত আয়ামবেচস সর্বপ্রথম ‘থিওজফি’— শব্দটির উল্লেখ করেন। আইরিশ মহিলা অ্যানি বেসান্ত সোসাইটিতে যোগদান করলে (1889 সাল) এটি জনপ্রিয় ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাঁরই চেষ্টায় ভারতের নানা স্থানে এর শাখা প্রশাখা গড়ে ওঠে। বেসান্তের চেষ্টায় কাশীতে স্থাপিত হয় কেন্দ্রীয় হিন্দু বিদ্যালয়। 1945 সালে এই বিদ্যালয়টি মদনমোহন মালব্যের উদ্যোগে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় পরে অ্যানি বেসান্তকে ডি. এল. উপাধিতে ভূষিত করেন। বেসান্তের মতে – ভারতে থিওজফিক্যাল সোসাইটির - প্রধান কাজ হল হিন্দু, জরাথুস্ট্রীয় ও প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মের পুনর্জাগরন ঘটানো। বেসান্ত বলতেন- ‘হিন্দু আদর্শের পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই পরাধীন ভারতবাসী ফিরে পাবে তার আত্ম সম্মান, দেশাত্মবোধ ও স্বাধীনতা।‘
থিওজফিক্যাল সোসাইটির মূল কয়েকটি লক্ষ্য ছিল-
ক) জাতি-ধর্ম-বর্ন ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সৌভ্রাতৃত্ব স্থাপন।
খ) প্রাচীন হিন্দুধর্মের হৃত মর্যাদা ফিরিয়ে আনা।
গ) দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার আদর্শে সকলকে অনুপ্রানিত করা।
ঘ) হিন্দুদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি গড়ে তোলা।
ঙ) ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন ও চর্চায় উৎসাহ দান ইত্যাদি।
খিওজফিক্যাল সোসাইটির কিছু উল্লেখযোগ্য অবদান হল-
ক) হিন্দুধর্মের পুনুরুত্থান:- থিওজফিক্যাল সোসাইটির উদ্যোগে গড়ে ওঠা আন্দোলন হিন্দু ধর্মের নব উত্থানে সাহায্য করেছিল।
খ) ধর্মীয় বিশ্বাস:- থিওজফিক্যাল আন্দোলন স্বদেশবাসীকে নিজ ধর্মের প্রতি বিশ্বাস অটুট রাখতে সাহায্য করেছিল।
গ) বিদেশি বিদ্বেষ হ্রাস:- বেসান্ত বিদেশি সংস্কার (বন্দিশালার সংস্কার, হাসপাতালের রুগিদের সঙ্গদান) এর আদর্শ এদেশে প্রচলন করলে বিদেশিদের প্রতি ভারতীয়দের বিদ্বেষের ধারনা অনেকটাই পরিবর্তিত হয়।
সোসাইটির ব্যর্থতার কারন:-
ক) হিন্দুধর্মের মূর্তি পুজা ও আচার অনুষ্ঠানকে সমর্থন করে থিওজফিক্যাল সোসাইটি প্রথম দিকে জনপ্রিয়তা পেলেও শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে পারেনি।
খ) থিওজফিক্যাল আন্দোলন মূলত পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত মুষ্টিমেয় শহুরে ভারতীয়দের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। গ্রামীন সাধারন দরিদ্র ভারতীয়দের সঙ্গে এই আন্দোলনের কোন সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি।
গ) এই সোসাইটির আন্দোলন হিন্দু জাতীয়তাবাদ কেন্দ্রিক হওয়ায় ভারতের অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায় বিশেষত মুসলিম সম্প্রদায় এই আন্দোলন থেকে দূরে সরে থাকে।
অ্যানি বেসান্ত 1946 সালে জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং দেশের সর্বত্র সভাসমিতি করে এবং প্রবন্ধাদি লিখে স্বাধীনতা আন্দোলন পরিচালনা করতে থাকেন। এই কারনে তাঁকে কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। কারামুক্তির পরের বৎসরই 1917 সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রীর পদ অলংকৃত করেন তিনি।
হোমরুল লীগ স্থাপন করে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিখ্যাত হোমরুল আন্দোলনের ইনিই ছিলেন প্রধান পরিচালিকা। 1933 সালে অ্যানি বেসান্ত দেহত্যাগ করেন।
থিওজফিক্যাল সোসাইটি ও
অ্যানি বেসান্ত দ্বিতীয় পর্ব>>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
অ্যানি বেসান্ত। থিওসফিক্যাল সোসাইটি। হোমরুল আন্দোলন। কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি। সেন্ট্রাল হিন্দু কলেজ। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতের প্রথম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। মাদ্রাজ হিন্দু অ্যাসোসিয়েশান।