ঝাঁসীর রানী লক্ষ্মীবাঈ
Set By - Manas Adhikary
সিপাহী বিদ্রোহের নেতৃত্ববর্গ। The Leaders of the Sepoy Mutiny.
ঝাঁসির রানী লক্ষ্মী বাই। মনিকর্নিকা। মানু। চামেলী। ছাবেলী। গঙ্গাধর রাও। মেজর এলিস। লক্ষ্মীবাঈয়ের প্রিয় সখী। মেজর হিউরোজ। গোলাম মহম্মদ গাউস খান। ঝলকারি বাই। মুরার যুদ্ধ। কোট-কি-সারায়ে যুদ্ধ। মেদিনীপুরের লক্ষ্মীবাঈ। 1942 সালের রানি ঝাঁসি।
এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
ঝাঁসীর রানী লক্ষ্মীবাঈ সংক্ষিপ্তরূপ। About Lakshmibai.
ভারতের ইতিহাসে
দেশভক্তির জন্য যাঁরা অমরত্ব লাভ করেছেন তাদের মধ্যে রানী লক্ষ্মীবাঈ অন্যতমা। স্বাধীনতার
এই পূজারী মাত্র ২২ বছর বয়সে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হন। ১৯৩৫ সালের ১৯ নভেম্বর
উত্তরপ্রদেশের বারানসী (কাশী) তে জন্ম গ্রহন করেনরানী লক্ষ্মীবাঈ। ছোটবেলায় তাঁর নাম
ছিল মনিকর্নিকা। বাবা-মা তাঁকে আদর করে ডাকতেন মানু নামে। এছাড়াও সুমিষ্ট মুখশ্রীর
জন্য তিনি চামেলী বা ছাবেলী নামে পরিচিতি ছিলেন। তাঁর বাবা বিদুরে পেশোয়ার দরবারে
চাকরি করতেন। তিনি মাত্র চারবছর বয়সে মাতৃহারা এবং ১৩ বছর বয়সে পিতৃহারা হন। ১৮৪২
সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ঝাঁসীর রাজা ৫৪ বছর বয়সী বাল গঙ্গাধর রাও এর সাথে তাঁর বিবাহ
হয়। বিবাহের পর তাঁর নাম হয় ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ। ১৮৫১ সালে তিনি এক পুত্রসন্তানের
জন্ম দেন যার নাম রাখেন দামোদর রাও। এই দামোদর রাও ছিলেন স্বল্পায়ু বিশিষ্ট। তাঁর
মৃত্যুর পর মহারাজ গঙ্গাধর রাও একটি শিশুকে দত্তক নেন এবং তার নামও রাখেন দামোদর রাও
(ডাকনাম আনন্দ রাও)। ১৮৫৩ সালে মহারাজ গঙ্গাধর রাও মৃত্যু হয়। এর ফলে ব্রিটিশ গভর্নর
জেনারেল লর্ড ডালহৌসী প্রবর্তিত স্বত্ববিলোপনীতির বলে ঝাঁসি ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে
চলে যায়। ১৮৫৪ সালে লক্ষ্মীবাঈকে ৬০০০০ টাকা দেওয়া হয় এবং ঝাঁসী ত্যাগ করতে বলা
হয়। লক্ষ্মীবাঈ পেনশান প্রত্যাখ্যান করে লন্ডনের আদালতে মামলা করেছিলেন। কিন্তু ব্রিটিশ
আদালত তাঁর শুনানি খারিজ করে দিয়ে তাঁকে ঝাঁসী দুর্গ পরিত্যাগ করতে বলেন। মেজর এলিস
যখন ঝাঁসীকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করার কথা বলেন তখন রানী সদর্পে বলেছিলেন -'ম্যায়
মেরী ঝাঁসী নেহী দুঙ্গী'
স্যার হিউরোজের
নেতৃত্বে ব্রিটিশ সেনারা ১৮৫৮ সালের ২১ মার্চ ঝাঁসীতে পৌঁছায় এবং ২২ মার্চ তারা কেল্লা
ঘিরে একটানা সাতদিন কেল্লার দেওয়াল লক্ষ্য করে গোলাবর্ষন করতে থাকে। রানীর প্রধান
তোপচি গোলাম মহম্মদ গৌস এবং খোদা বসক কেল্লার বুরুজে রাখা চারটি বড় কামান কড়ক বিজলী,
ভবানী শংকর, গর্জন ও নলাদার থেকে গোলাবর্ষন করে প্রত্যুত্তর দিতে থাকেন। এইসময় ৩১
মার্চ তাঁতিয়া টোপী ২০০০০ সৈন্য নিয়ে রানীকে সাহায্য করতে এলে হিউরোজের বাহিনী ওরছা
নামক স্থানে তাঁতিয়া টোপীকে পরাজিত করেন। অবশেষে রানীর এক দ্বাররক্ষী অর্থের লোভে
কেল্লার দ্বার খুলে দিলে ব্রিটিশ সৈন্যরা কেল্লা দখল করে। রানী রাতের অন্ধকারে পুরুষের
ছদ্মবেশে দত্তক পুত্রকে নিরো কেল্লার দেওয়াল টপকে পালিয়ে যান। একরাতে ২১ মাইল পথ
পেরিয়ে গিয়ে কাল্পিতে শিবির স্থাপন করে। এইখানে তিনি তাঁতিয়া টোপীর সাথে মিলিত হন।
২২ মে ব্রিটিশ মেজর কলিন ক্যাম্পবেল কাল্পি আক্রমন করলে রুদ্ধশ্বাস যুদ্ধের মাধ্যমে
লক্ষ্মীবাঈ ও তাঁতিয়া টোপী পিছু হটে গিয়ে ইংরেজ মদতপুষ্ট সিন্ধিয়াকে পরাজিত করে
গোয়ালিয়র দখল করেন। খবর পেয়ে হিউরোজ তার বাহিনী নিয়ে এসে ১৬ জুন মুরার কাছাকাছি
অঞ্চলে তাঁতিয়া টোপীর মুখোমুখি হয়ে ১৭ জুন তাঁকে পরাজিত করেন। জেনারেল হিউরোজ কোট-কি-সারয়ে
নামক স্থানে পুরুষ সৈনিক বেশধারী রানী লক্ষ্মীবাঈ ও তাঁর সেনাবাহিনীর সম্মুখীন হন।
রানীর যুদ্ধ কৌশল দেখে হিউরোজ চমকে উঠেছিলেন। ব্রিটিশ সৈন্য পরিবৃত্ত হয়েও রানী দাঁতে
ঘোড়ার লাগাম চেপে দুইহাতে তলোয়ারবাজী করতে করতে এগিয়ে যান। তাঁর সাথে ছিল মুন্দরন,
রঘুনাথ সিং, রামচন্দ্র দেশমুখ, এবং পশ্চাতে ছিল কুয়ার গুর মুহম্মদ ও ২৫ জন লালকোর্তা
সাওয়ার। যুদ্ধে লালকোর্তা সাওয়াররা প্রান হারায়। এইসময় ব্রিটিশদের ছোঁড়া একটা
হুল এসে রানীর ডানবক্ষে বিঁধে যায়। রানী তলোযারের আঘাতে হল নিক্ষেপকারীর প্রান নিয়ে
নেন। ফিরিঙ্গীদের গুলির আঘাতে মুন্দরন লুটিয়ে পড়লে তিনি মুন্দরনের হত্যাকারীকে হত্যা
করেন। এরপর তিনি এক নালার কাছে এসে নালা পেরোবেন কিনা এই নিয়ে ইতস্তত করতে থাকলে একজন
ফিরিঙ্গী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন, গুলি এসে লাগে রানীর জঙ্ঘায়। আক্রমনকারী রানির
কাছাকাছি আসতেই রানী তলোয়ারের আঘাতে তাকে ধরাশায়ী করেন। গুল মহম্মদ রানীর সাহায্য
এগিয়ে আসার আগেই এক ফিরিঙ্গী তলোয়ার দিয়ে রানির মাথায় আঘাত করে। এরফলে রানীর মাথার
এক অংশ কেটে গিয়ে ডান চোখ বেরিয়ে আসে। রাগে গুল মহম্মদ উক্ত ফিরিঙ্গীকে তলোয়ার দিয়ে
এমনভাবে আঘাত করে যে তার শরীর দুটুকরো হয়ে যায়। গুল মহম্মদ, রঘুনাথ সিং ও রামচন্দ্র
দেশমুখ রক্তস্নাত রানীকে ঘোড়ার পিঠ থেকে সাবধানে নামিয়ে বাবা রামদাসের কুটিয়াতে নিয়ে আসেন। সেখানে রানী শেষবারের
মত মুখ খুলে জল খেতে চাইলে বাবা রামদাস তাকে জল খাওয়ান। কিছুক্ষনের মধ্যে রানীর মৃত্যু
হয় এবং তাঁকে বাবা রামদাসের কুটিয়াতে সৎকার করা হয় ১৮৫৮ সালের ১৭ জুন।
ঝাঁসীর রাণী লক্ষ্মীবাঈ সম্পর্কিত অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর >>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
ঝাঁসির রানী লক্ষ্মী বাই।
মনিকর্নিকা। মানু। চামেলী। ছাবেলী। গঙ্গাধর রাও। মেজর এলিস। লক্ষ্মীবাঈয়ের
প্রিয় সখী। মেজর হিউরোজ। গোলাম মহম্মদ গাউস খান। ঝলকারি বাই। মুরার যুদ্ধ। কোট-কি-সারায়ে
যুদ্ধ। মেদিনীপুরের লক্ষ্মীবাঈ। 1942 সালের রানি ঝাঁসি।