Type Here to Get Search Results !

সেন আমলের ভাষা ও সাহিত্য প্রথম পর্ব [ Sen Period]

 

সেন আমলের ভাষা ও সাহিত্য

Set By - Manas Adhikary

সেন আমলের ভাষা ও সাহিত্য প্রথম পর্ব| Language and Literature of the Sen Period Part-I

সেন আমলের ভাষা ও সাহিত্য| দানসাগর| অদ্ভুতসাগর| বল্লালচরিত| দায়ভাগ| গীতগোবিন্দ| পঞ্চরত্ন| জয়দেব| ধোয়ী| শরন| উমাপতিধর| পবনদূত| দেওপাড়া প্রশস্তি| শ্রীধরদাস| সদুক্তিকর্ণামৃত|

নমস্কার, অভিনব  একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই।  আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো  সেন আমলের ভাষা ও সাহিত্য এই পর্বে সেন আমলের ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কিত আলচনা করব। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই  গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়

এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

 

সেন আমলের ভাষা ও সাহিত্য সংক্ষিপ্তরূপ| About Language and Literature of the Sen Period


সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে সেন যুগ এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ আমল হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সেনযুগকে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের সুবর্নযুগও বলা হয়। সেনরাজাদের রাজসভায় যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন তার সকলেই ছিলেন বিদ্ধান ও গুনগ্রাহী। সেননরপতি বল্লাল সেন নিজে সংস্কৃত ভাষায় দানসাগর, অদ্ভুতসাগর, ব্রতসাগর, আচারসাগর, প্রতিষ্ঠাসাগর নামক পাঁচটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। এদের মধ্যে দানসাগর ও অদ্ভুতসাগর গ্রন্থদুখানি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই অদ্ভুতসাগর গ্রন্থটির রচনা তিনি শুরু করলেও গ্রন্থখানির রচনার কাজ তিনি সম্পূর্ন করে যেতে পারেননি। তাঁর অনুরোধক্রমে সেন বংশের পরবর্তী নরপতি এবং তাঁর পুত্র লক্ষ্মন সেন অদ্ভুতসাগর গ্রন্থটির রচনা কাজ শেষ করেন। দানসাগর প্রশ্নটি ৭০ অধ্যায়ে বিভক্ত এবং এই গ্রন্থটি দান সম্পর্কিত। অদ্ভুতসাগর গ্রন্থটিতে অন্তরীক্ষ, বায়বীয় নিয়ে অর্থাৎ জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত আলোচনা করা হয়েছে। অবশিষ্ট তিনটি গ্রন্থের এখন আর উপলব্ধ নেই।

সেন আমলে বল্লালসেনের গুরু অনিরুদ্ধ হারলতা ও পিতৃদয়িত নামক দুটি গ্রন্থ রচনা করেন। অশৌচ সম্পর্কিত গ্রন্থ হলো ‘হারলতা' এবং শ্রাদ্ধাদি সম্পর্কিত ক্রিয়াকর্মের বর্ণনামূলক গ্রন্থ হল 'পিতৃদয়িতা'। সেনবংশের অন্যতম উপাদান হল 'বল্লালচরিত'। বল্লাল চরিত নামক দুটি গ্রন্থ আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রথমটি বল্লাল সেনের শিক্ষক গোপাল ভট্ট কর্তৃক রচিত এবং দ্বিতীয়টি গোপালভট্টের বংশধর আনন্দভট্ট কর্তৃক রচিত। গোপাল ভট্ট রচিত বল্লালচরিত দুটি খন্ডে বিভক্ত। আনন্দভট্ট নবদ্বীপের শাসক বুদ্ধিমন্ত খানের নির্দেশে 'বল্লালচরিত' নামক দ্বিতীয় গ্রন্থটি রচনা করেন যা বল্লাল সেনের রাজত্বকালের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। লক্ষ্মণসেনের মন্ত্রী হলায়ুধ ছিলেন বিশিষ্ট পন্ডিত ব্যক্তি। হলায়ুধ লিখিত গ্রন্থগুলি হলো 'ব্রাহ্মনসর্বস্ব', মীমাংসাসর্বস্ব', 'বৈষ্ণবসর্বস্ব', 'শৈবসর্বস্ব' এবং 'পন্ডিতসর্বস্ব'। এদের মধ্যে ব্রাহ্মনদের নিত্যকর্ম ও সংস্কারাদি সম্পর্কিত গ্রন্থ 'ব্রাহ্মনসর্বস্ব' ছাড়া বাকি চারখানি গ্রন্থ আজ বিলুপ্ত। সেন আমলেই সম্ভবত 'দায়ভাগ' গ্রন্থের রচয়িতা জীমূতবাহন আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁর অপর দুখানি গ্রন্থের নাম 'ব্যবহারমাতৃকা' ও 'কালবিবেক'। সম্পত্তির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত তাঁর লেখা 'দায়ভাগ' গ্রন্থটি সেযুগে ও পরবর্তী যুগে বাংলায় বহুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। 'ব্যবহারমাতৃকা' গ্রন্থটি ছিল বিচারব্যবস্থার উপর লেখা এবং 'কালবিবেক' গ্রন্থে ব্রাহ্মন্যধর্মের পুজানুষ্ঠানের শুভকাল, সৌরমাস, চান্দ্রমাস প্রভৃতি বিচার্য বিষয়গুলি আলোচিত হয়েছে।

সেন আমলে কাব্য রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন জয়দেব, ধোয়ী, শরন, উমাপতিধর এবং গোবর্ধন। এরা সবাই লক্ষ্মন সেনের রাজসভায় উপস্থিত ছিল। এদেরকে পঞ্চরত্ন বলা হয়। বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ 'গীতগোবিন্দ" এর রচয়িতা জয়দেবের জন্মস্থান কেন্দুবিল্ব গ্রামে। অনেকে মনে করেন এই কেন্দুবিল্ব গ্রামটি হলো বর্তমানে বীরভূম জেলার কেন্দুলী গ্রাম, আবার কার কার মতে কেন্দুবিল্ব ওড়িশায় অবস্থিত। জয়দেব তার গীতগোবিন্দ কাব্যটিকে নিজেই 'মধুর-কোমল-কান্ত-পদাবলী' নামে আখ্যায়িত করেছেন। এই কাব্যগ্রন্থে রাধাকৃষ্ণের প্রেমকে গীতি আলেখ্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

পবনদূত' কাব্যটি রচনা করেন ধোয়ী। মলয়পর্বতবাসিনী গন্ধর্বকন্যা কুবলয়মতী পবনদূত মারফৎ তাঁর প্রেমাস্পদ লক্ষ্মণসেনের নিকট বার্তা পাঠানো নিয়ে কাব্যগ্রন্থে নিয়ে আলোচিত হয়েছে। এই কাব্যগ্রন্থটি কালিদাসের 'মেঘদূত' কাব্যের অনুপ্রেরনায় লেখা। বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ রচয়িতা হল এর 'গাথাসপ্তসতীর' অনুকরনে সেন আমলে 'আর্যাসপ্তসতী' নামক কাব্যগ্রন্থটি রচনা করেন গোবর্ধনাচার্য। শরন ও উমাপতিধরের কোন গ্রন্থ বর্তমানে উপলব্ধ নেই। সদুক্তিকর্ণামৃতে শরন রচিত ২০ টি শ্লোক উদ্ধৃত আছে। এছাড়াও সদুক্তিকর্ণামৃতে উমাপতিধরের ৯১ টি শ্লোক উদ্ধৃত আছে। উমাপতির নিজে ছিলেন দেওপাড়া প্রশস্তির প্রশস্তিকর। এই প্রশস্তিটি খোদাই করেছিলেন শুলপানি। বেশীরভাগ ঐতিহাসিক এটি মেনে নিয়েছেন যে, উমাপতিধর বিজয়সেন থেকে শুরু করে লক্ষ্মন সেন পর্যন্ত তিনপুরুষ ধরে সেন রাজসভায় যুক্ত ছিলেন। বখতিয়ার খলজী কর্তৃক লক্ষ্মন সেন পরাজিত হবার পর উমাপতিধরের লেখনীতে বখতিয়ারকে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনের চিত্র ধরা পড়েছে। আর এখানেই উমাপতিধরের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

সদুক্তিকর্ণামৃত গ্রন্থটি সংকলিত করেন লক্ষ্মনসেনের সভাসদ শ্রীধরদাস। ৪৮৫ জন কবির ২৩৭০ টি শ্লোক এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে বল্লালসেন ও লক্ষ্মন সেন রচিত কিছু কবিতা আমরা পাই। এই সেন আমলেই আর একখানি সংকলিত কবিতার বই 'সুভাষিত-রত্নকোষ' পাই যার লেখক ছিলেন বিদ্যাকর। সেন যুগের কথাশিল্পী ছিলেন শ্রীহর্ষ। তিনি একধারে ছিলেন দার্শনিক অপরদিকে ছিলেন কবি। তাঁর লেখা কাবা ‘নৈষধচরিত 'নৈষধীয়', নল দময়ন্তীর প্রনয় কাব্যের প্রতিপাদ্য বিষয়। এছাড়াও শ্রীহর্ষ 'বিজয়প্রশস্তি' ও 'গৌড়োবীর্শকুলপ্রশস্তি' নামক দুখানি কাব্য রচনা করেছিলেন যা আজও অনাবিষ্কৃত। এই শ্রীহর্য ছিলেন কান্যকুব্জের বাসিন্দা। তিনি গাহড়বালরাজ জয়চন্দ্রের সভাকবি ছিলেন।

সেন আমলের প্রখ্যাত শিল্পী ছিলেন শূলপানি। তিনি সেননরপতি বিজয়সেনের প্রসাদধন্য ছিলেন। শূলপানি 'রণক' উপাধি ধারন করেছিলেন। উমাপতিধর যে দেওপাড়া প্রশস্তি রচনা করেছিলেন সেন প্রশস্তির খোদাইকর ছিলেন এই শূলপানি। দেওপাড়া লেখে শূলপানি ‘বরেন্দ্রের শিল্পী গোষ্ঠীর চূড়ামনি' রূপে বর্নিত হয়েছে।

 

 সেন আমলের ভাষা ও সাহিত্য দ্বিতীয় পর্ব >>>>

 

 

প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন

 টেলিগ্রাম গ্রুপ যোগদান করার জন্য - Click Here


ধন্যবাদ

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 

 

পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here

ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে  - Click Here

প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here

মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here

আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here

 ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad