বল্লাল সেন
Set by - Manas Adhikary
বল্লাল সেন প্রথম পর্ব | Sen Dynasty and Ballal Sen Part –I
বল্লালসেন। বল্লালঢিবি । অদ্ভুতসাগর। দানসাগর। আচারসাগর ।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো বল্লাল সেন। এই পর্বে থাকছে বল্লাল সেন সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা। পরবর্তী পর্বে বল্লাল সেন সম্পর্কিত কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর আলচনা করব। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI,
WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe
History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment
Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
বল্লাল সেন সংক্ষিপ্তরুপ[|
About Sen Dynasty And Ballal Sen Part –I
বল্লাল সেন ছিলেন সেন রাজবংশের উল্লেখযোগ্য দ্বিতীয় নরপতি। তাঁর পিতা ছিলেন বিজয় সেন। বিজয়সেনের মৃত্যু হলে তাঁর শুর বংশীয় মহিষী বিলাসদেবীর গর্ভজাত পুত্র সন্তান বল্লাল সেন রাজবংশের সিংহাসনে বসেন। বল্লাল সেন চালুক্যরাজ দ্বিতীয় জগদেবমল্লের কন্যা রমাদেবীকে বিবাহ করেছিলেন।
বল্লাল সেনের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে জানার সবথেকে ভালো ঐতিহাসিক উপাদান হল আনন্দভট্ট রচিত বল্লালচরিত (বল্লাল চরিত নামক দুটি গ্রন্থ আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রথমটি বল্লাল সেনের শিক্ষক গোপাল ভট্ট কর্তৃক রচিত এবং দ্বিতীয়টি গোপালভট্টের বংশধর আনন্দভট্ট কর্তৃক রচিত)। যদিও এই গ্রন্থে বল্লালসেন সম্পর্কে কিছু অতিশয়োক্তি করা হয়েছে। তবু গ্রন্থের বেশীরভাগ অংশকেই সত্য বলে ধরা হয়। বল্লাল সেনের নিজের রচিত 'দানসাগর' ও ‘অদ্ভুতসাগর' থেকেও তাঁর সম্পর্কে জানা যায়। বিভিন্ন ঐতিহাসিক উৎস থেকে জানা যায় যে, তিনি দানসাগর নামক গ্রন্থটির লেখা শেষ করলেও অদ্ভুতসাগর নামক গ্রন্থটির লেখা শেষ করতে পারেন নি। পরবর্তীকালে তাঁর পুত্র লক্ষ্মন সেন এই অদ্ভুতসাগর গ্রন্থটি সমাপ্ত করেন। এছাড়াও তাঁর রাজত্বকালের একাদশ তম বর্ষে উৎকীর্ণ নৈহাটি তাম্রশাসন ও নবম বর্ষে উৎকীর্ণ সনোখর প্রতিলিপি থেকে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের পরিচয় পাওয়া যায়।
বল্লাল সেন ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী ও সুবিবেচক শাসক। তিনি রাজ্য বিস্তারের থেকে নিজরাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠায় বেশি সচেষ্ট ছিলেন। নামমাত্র পাল নরপতি গোবিন্দপালকে পরাজিত করে সেন বংশের যাত্রাপথকে বিপদমুক্ত করে তিনি ক্ষান্ত হয়েছিলেন। কয়েকটি ঐতিহাসিক উপাদান থেকে জানা যায় যে, বল্লাল সেন মগধ ও মিথিলা জয় করেছিলেন। কিন্তু বল্লাল সেন কর্তৃক মগধ ও মিথিলা জয় করার পক্ষে কোন প্রমান মেলে নি বরং বিরুদ্ধ প্রমান অনেক পাওয়া গেছে। যেমন, মিথিলা যে তাঁর পিতা বিজয়সেন জয় করেছিলেন তা বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদান থেকে প্রমানিত। এটুকু বলা যায় যে, মিথিলা বল্লাল সেনের রাজত্বভুক্ত ছিল। বল্লাল সেন তাঁর রাজ্যকে ৫টি ভাগে ভাগ করেছিলেন। যথা-
রাঢ়
বরেন্দ্র
বাগড়ী
বঙ্গ ও
মিথিলা
বল্লালসেন ছিলেন একজন অত্যন্ত জ্ঞানী ও পন্ডিত ব্যক্তি। প্রশস্তিকাররা তাকে 'বিদ্বানমন্ডলীয় চক্রবর্তী' বলে প্রশংসাও করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় পাঁচটি গ্রন্থ রচনা করেন। যথা-
দানসাগর
অদ্ভুতসাগর
ব্রত সাগর
আচারসাগর
প্রতিষ্ঠাসাগর
পিতা বিজয়সেনের মতই বল্লাল সেন ছিলেন শৈব। অন্যান্য উপাধির সাথে তিনি 'অরিরাজ নিঃশঙ্ক শংকর' উপাধি গ্রহন করেছিলেন। তিনি হিন্দু সমাজকে নতুনভাবে গঠন করে ব্রাহ্মন, বৈদ্য, ও কায়স্থ এই তিন শ্রেণীর মধ্যে কৌলিনা প্রথার প্রবর্তন করেন। ন্যায়পরায়নতা, জাতিগত পবিত্রতা, সততা প্রভৃতি সদগুনগুলির প্রতিষ্ঠাকরনে তিনি কিছু কিছু বিশেষ রীতিনীতি মান্য করার বিধান দেন। বল্লাল চরিতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, তিনি নিজের পছন্দমতো কোনো কোনো বর্নকে অবনমিত করেছেন আবার কোনো কোনো বর্নকে উচ্চমর্যাদায় উন্নীত করেছেন। বিভিন্ন পণ্ডিতদের মতে তিনি হিন্দু তান্ত্রিক ধর্মের অনুরাগী ছিলেন। তাঁর আমলে বৌদ্ধ ধর্ম দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং ব্রাহ্মন্য ধর্মের আধিপত্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। বল্লালসেন জীবিত থাকাকালীন তাঁর পুত্র লক্ষ্মনসেনকে সিংহাসনে বসিয়ে প্রাচীন হিন্দু ধর্মানুযায়ী স্ত্রী রমাদেবীকে নিয়ে ত্রিবেনীর নির্জরপুরে বানপ্রস্থে গমন করেন। পরবর্তীকালে তিনি গঙ্গাতীরেই দেহত্যাগ করেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here