বর্জ্য পদার্থ প্রথম পর্ব
Set by- Manas Adhikary
বর্জ্য পদার্থ প্রথম পর্ব। Waste 1st Part.
বর্জ্য কাকে বলে। বর্জ্য পদার্থের শ্রেণিবিভাগ। তেজস্ক্রিয় বর্জ্য। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। Waste Management। বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ। কম্পোস্টিং। Composting। স্ক্রাবার। Scrubber। ভরাটকরণ। ল্যান্ডফিলিং। ফ্লাই অ্যাশ। স্বচ্ছ ভারত অভিযান।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো বর্জ্য পদার্থ প্রথম পর্ব। আজ এই পর্বে থাকছে বর্জ্য সম্পর্কিত কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। পরবর্তী পর্বে এই টপিকের উপর কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করব। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
বর্জ্য পদার্থ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর প্রথম পর্ব। Waste short type Q & Ans 1st Part.
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
বর্জ্য ( Waste ) কাকে বলা হয় ?
- যে সব বস্তু ব্যবহারের অযোগ্য , পরিত্যক্ত , কঠিন বা তরল বা গ্যাসীয় অবস্থায় প্রকৃতিতে পড়ে থেকে পরিবেশদূষণ ঘটায় তাকে বলে বর্জ্য বলা । যেমন - ভাঙা প্লাস্টিক , ছেঁড়া কাগজ , নোংরা জল ইত্যাদি।
বর্জ্য পদার্থের শ্রেণিবিভাগ করো।
- পরিবেশের বর্জ্য পদার্থগুলিকে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে সাধারণত বিশেষ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যায।
ভৌত অবস্থা
বর্জ্য গুলিকে প্রকৃতিতে যে অবস্থায় পাওয়া যায় তার উপর ভিত্তি করে বর্জ্যগুলিকে তিনভাগে ভাগ করা হয়। যথা-.
ক) কঠিন ( Solid ) - বর্জ্য পদার্থের বিভিন্ন প্রকার ভৌত অবস্থাগুলির মধ্যে কঠিন বর্জ্যের উপস্থিতি পরিবেশে সবচেয়ে বেশি। যেমন - গৃহস্থালির জঞ্জাল , প্লাস্টিক , পেপার , পুরোনো অব্যবহার্য আসবাবপত্র , ভাঙা বোতল ও কাচের টুকরো , চট , খবরের কাগজ । এ ছাড়া বাজারের আনাজপাতি ও হাসপাতালের নানা অব্যবহার্য দ্রব্যাদি , যেমন সিরিঞ্চ, গজ কাপড়, তুলো , রোগীর জামাকাপড় ইত্যাদি । এ ছাড়াও রয়েছে নানান শিল্পজাত বর্জ্য পদার্থ , যা সাধারণত কলকারখানাগুলিতে উৎপন্ন হয় ।
খ) তরল ( Liquid )- তরল বর্জ্য পদার্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নর্দমা ও নালাবাহিত গৃহস্থালির পয়ঃপ্রণালীজাত নানান তরল পদার্থ , কৃষিজমিতে কীটনাশক প্রয়োগের পরে জলসেচ দ্বারা বাহিত জল যা পার্শ্ববর্তী নদী ও জলাশয়ে মেশে । এ ছাড়াও রয়েছে নানান শিল্পজাত তরল বর্জ্য , নানান রাসায়নিক পদার্থ প্রভৃতি যা সাধারণত কলকারখানাগুলিতে উৎপন্ন হয়।
গ) গ্যাসীয় ( Gaseous ) - কলকারখানা থেকে নির্গত নানা SPM অর্থাৎ সাসপেনডেড পারটিকুলেট ম্যাটার যথা - বিষাক্ত ধোঁয়া , ধুলোকণা , বিষাক্ত কণা , কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস, বাতানুকূল যন্ত্র থেকে নির্গত CFC প্রভৃতি বিষাক্ত গ্যাস সমূহ এই প্রকার গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থের উদাহরণ।
বিষক্রিয়তা
বিষক্রিয়তার তারতম্য অনুযায়ী বর্জ্য পদার্থকে দুভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
ক) বিষাক্ত - যে সব বর্জ্য পদার্থ থেকে বিভিন্ন ধরনের বিষক্রিয়তার সৃষ্টি হয় এবং যেগুলি একেবারেই পরিবেশবান্ধব নয় , সেগুলিকে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ বলা হয়। যেমন — শিল্পজাত নানা প্রকার তেজস্ক্রিয় পদার্থ ( ইউরেনিয়াম , থোরিয়াম প্রভৃতি ) এবং কিছু রাসায়নিক তরল পদার্থ , যা বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে ।
খ) বিষহীন - যেসব বর্জ্য পদার্থগুলির বিষক্রিয়তা নেই এবং যেগুলি পরিবেশের কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন করে না তাদের বিষহীন বর্জ্য পদার্থ বলে । এই বিষহীন বর্জ্য পদার্থগুলি সাধারণত Biodegradable বা জৈবিকভাবে বিয়োজিত হয় ।
যেমন - বাজারের বর্জ্য পদার্থ , কলকারখানার বর্জ্য প্রভৃতি ।
কৃষিজ বর্জ্য কীভাবে সৃষ্টি হয় ?
- চাষবাসের সময় যেসব রাসায়নিক সার ও কীটনাশক জমিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে , সেগুলির অবশিষ্টাংশ সাধারণত মাটিতে মিশে বৃষ্টির জলের সঙ্গে বা জলসেচের সঙ্গে ধুয়ে পার্শ্ববর্তী কোনো জলাশয় , পুকুর বা নদীতে গিয়ে মেশে । এগুলিই হল কৃষিজ তরল বর্জ্য । এ ছাড়াও যখন শস্যখেতে পোকা লেগে যায় বা খেতে ফসল নষ্ট হয়ে যায় তখন তা বিক্রির বা আহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে এবং কৃষিজ বর্জ্য হিসেবে পরিগণিত হয় । কৃষির ফলন বাড়াতে রাসায়নিক সার , কীটনাশক , আগাছানাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয় । এগুলিতে নাইট্রেট , ফসফেট , পটাশ , অ্যামোনিয়া , ক্লোরাইড প্রভৃতি রাসায়নিক মৌল থাকে । এ ছাড়াও জৈব সার হিসেবে গবাদি পশুর বিষ্ঠা , গাছের পাতা , ডাল , কেঁচোর কম্পোস্ট প্রভৃতি ব্যবহৃত হয় । যদিও এগুলি জৈব ভঙ্গুর অর্থাৎ নিজস্ব প্রক্রিয়ায় পুনরায় মাটিতে মিশে যায় তবুও সাময়িক সময়ের জন্য এগুলি পরিবেশের আবর্জনা । এ ছাড়া কৃষিফসল কেটে নেওয়ার পর পড়ে থাকা গাছের গোড়ার অংশে আগাছা বা ধান , গম এর তুষ , পাট , তুলোর আঁশের বাতিল অংশ পরিবেশে বর্জ্য সৃষ্টি করে ।
চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য কীভাবে সৃষ্টি হয় ?
- হাসপাতাল , নার্সিংহোম বা বিভিন্ন প্যাথোলজিক্যাল য ল্যাবরেটরি থেকে যে বর্জ্য পাওয়া যায়, তাকে চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য বলে । চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহৃত ছুঁচ , সিরিঞ্জ , ছুরি , কাঁচি , ব্লেড , স্যালাই , গজকাপড় , বোতল , তুলো , ব্যান্ডেজ , মানব অঙ্গের ব্যবচ্ছিন্ন অংশ , চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষুধ , ওষুধের প্যাকেট , প্যাথোলজির রক্ত , মল , মুত্র ইত্যাদি হল চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্যের উদাহরণ ।
গ্যাসীয় বর্জ্যের উৎসগুলি লেখ ?
- বাতাসে ভাসমান লবণকণা , বায়ুকণা , ধূলোবালি যখন পরিবেশে ক্ষতিসাধন করে , তাকে বলে গ্যাসীয় বর্জ্য। কলকারখানা , যানবাহন থেকে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইড , মিথেন, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন , নাইট্রোজেন অক্সাইড , সালফার অক্সাইড , কার্বন মনোক্সাইড ইত্যাদি হল গ্যাসীয় বর্জ্যের উদাহরণ ।
তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ( Radioactive waste ) বলতে কী বোঝ ?
- উচ্চ তেজস্ক্রিয় ক্ষমতাসম্পন্ন পদার্থগুলির অবশিষ্টাংশ গুলিকে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য বলা হয়। তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইউরেনিয়াম , থোরিয়াম , রেডিয়াম প্রভৃতি উপাদান শিলাস্তরে থাকে। খনিগর্ভ থেকে ওই পদার্থ আহরণের সময় এই বর্জ্য সৃষ্টি হয় । এ ছাড়া মহাজাগতিক বিকিরণ থেকেও তেজস্ক্রিয় পদার্থ উৎপন্ন হয় , এগুলিও এই বর্জ্যের অন্যতম উৎস । এ ছাড়া পারমাণবিক বোমা তৈরি ; ও নিক্ষেপের সময়ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্য উৎপন্ন হয়ে থাকে । বিভিন্ন শিল্পে যেমন বিদ্যুৎ শিল্পে পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহৃত হয়, এটিও বর্জ্যের অন্যতম উৎস । ঘড়ি বা যন্ত্র শিল্পের নানা কাজে রেডিয়াম ব্যবহৃত হয় । চিকিৎসাশাস্ত্রে ক্যানসার প্রতিরোধে কেমোথেরাপি দেওয়ার সময়ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্য সৃষ্টি হয় ।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ( Waste Management ) বলতে কী বোঝ ? অথবা , বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ কী ?
- বর্জ্য পদার্থগুলিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সম্পূর্ণ নিঃশেষ করা অথবা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য উপাদানে পরিণত করার ব্যবস্থা বা পদ্ধতিকে বলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা । বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তিনটি কর্মসূচির মাধ্যমে বাস্তবায়িত করা হয়।
যথা-(ক) বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস(Reduce)
(খ) পুনর্ব্যবহার (Reuse)
(গ) পুনর্নবীকরণ (Recycling)।এই ত্রিমূখী কর্মসূচিকে সংক্ষেপে বলে 3R .
কঠিন, তরল, গ্যাসীয় বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে করা হয়। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ধাপগুলি হল (ক)বর্জ্য পৃথকরণ (খ)বর্জ্য ভরাটকরণ (গ)কম্পোস্টিং তরল।
(ক)Reduce বা বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস- আমাদের দৈনন্দিন ও জীবনের অপ্রয়োজনীয় পদার্থ যত কমানো সম্ভব হবে, বর্জ্যের পরিমাণও তত কমবে। অর্থাৎ দ্রব্য ব্যবহারে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে, অপ্রয়োজনীয় জিনিসই পরিবেশে বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ায়।
(খ) Reuse বা পুনর্ব্যবহার- পরিবেশের কিছু কিছু উপাদান আছে যাহা পুনর্ব্যবহারযোগ্য । যেমন- ধাতব বস্তু, কাগজ, যন্ত্রাংশ প্রভৃতি । এগুলি একবার ব্যবহার করার পর পুনরায় ব্যবহার করা যায় । দ্রব্যের পুনর্ব্যবহার সম্পদের সঞ্চয় বাড়ায় , তাই এই সম্পদগুলিকে সাশ্রয় করা ও পুনর্ব্যবহার খুব জরুরি ।
(গ) Recycle বা পুনর্নবীকরণ- বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোনো ব্যবহৃত দ্রব্যকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য সম্পদে পরিণত করে পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়াকে বলা হয় Recycle বা পুনর্নবীকরণ। যেমন — কাচ , ধাতু , প্লাস্টিক , কাগজ , ছেঁড়া কাপড় থেকে পুনরায় অনুরূপ দ্রব্য উৎপাদন সম্ভব । বর্জ্য সাধারণত নিষ্কাশন পদ্ধতিতে ও গ্যাসীয় বর্জ্য স্ক্রাবার পদ্ধতিতে ব্যবস্থাপনা করা হয় ।
কম্পোস্টিং(Composting) কী?
- যে পদ্ধতিতে জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য পদার্থগুলি জীবাণুর দ্বারা বিয়োজিত হয়ে হিউমাসে পরিণত হলে, তাকে বলা হয় কম্পোস্টিং পদ্ধতি। বর্জ্য জীবাণুর দ্বারা বিয়োজিত হয়ে এই প্রক্রিয়ায় হিউমাসে পরিণত হয়। কম্পোস্টিং মূলত দুধরনের হয়। যথা-
(ক) সবাত(বায়ুর উপস্থিতি)কম্পোস্টিং- বায়ুর উপস্থিতিতে জীবাণুর জৈব বিশ্লেষণ ঘটানোর পদ্ধতিকে বলে সবাত কম্পোস্টিং।
(খ) অবাত(বায়ু ছাড়া) কম্পোস্টিং- বায়ুর অনুপস্থিতিতে জীবাণুর জৈব বিশ্লেষণ ঘটানোর পদ্ধতির নাম অবাত কম্পোস্টিং। এর অপর নাম ব্যাঙ্গালোর পদ্ধতি। সাধারণত বাড়ি, শহর, দোকান ঘরের অব্যবহার্য আনাজ, ডিমের খোসা, অবশিষ্ট খাবারের অংশ প্রভৃতি এই পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াকরণ করে জৈব সারে পরিণত করা হয়। এই পদ্ধতি ল্যান্ডফিলিং পদ্ধতিরই একটি বিশেষ রূপ। অল্প স্থানে গভীর গর্ত খুঁড়ে প্রথমে শাকসবজির অংশবিশেষ বা রেচনজাত বর্জ্য ফেলা হয়। পরে তা ভরাট হয়ে গেলে মাটি চাপা দেওয়া হয়। তা পচে জৈব পদার্থ মাটিতে মিশে মাটির পুষ্টিমৌল বৃদ্ধি করে। আবার অন্যত্র একই পদ্ধতিতে মাটি খুঁড়ে বর্জ্য ভরাট করে মাটির মুখ বন্ধ করে বিয়োজিত করা হয়।
কম্পোস্টিং(Composting) করার উপকারিতা
- (ক) মৃত্তিকায় জৈব উপাদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
(খ) কৃষিক্ষেত্রে এই দ্রব্য সহজেই ব্যবহৃত হয়।
(গ) এই পদ্ধতিতে কঠিন বর্জ্য খুব বেশি পরিমাণে হ্রাস পায়।
স্ক্রাবার(Scrubber) সম্পর্কে লেখো।
অথবা, গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলি কী কী?
- গ্যাসীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি বিশেষ বিজ্ঞাননির্ভর প্রক্রিয়ার নাম স্ক্রাবার। এই পদ্ধতিতে শিল্প থেকে নির্গত দূষিত বায়বীয় পদার্থ ও গ্যাসীয় উপাদানের অপসারণ ঘটিয়ে বায়ুকে বিশুদ্ধ করা হয়।
স্ক্রাবিং পদ্ধতি দু প্রকার হয়। যথা-
(ক) শুষ্ক স্ক্রাবার(Dry scrubbers)- এই পদ্ধতির মাধ্যমে দুষিত নির্গত ধোঁয়াকে অম্লমুক্ত করা হয়।
(খ) আর্দ্র বা ভিজে স্ক্রাবার(Wet Scrubber- এই পদ্ধতির মাধ্যমে দূষণকারী গ্যাস, দূষণকণা অপসারণ করা হয়।
ভরাটকরণ(Land filling)পদ্ধতি কী?
- কোনো নীচু স্থানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি হল বর্জ্য ভরাটকরণ বা ল্যান্ড ফিলিং। জনবসতি, শিল্পাঞ্চল বা বাণিজ্যকেন্দ্র থেকে দূরে কোনে উন্মুক্ত খোলা জায়গাকে, খুব গভীরভাবে খনন করে মাটির নীচে বর্জ্য চাপা দেওয়া হয়। সাধারণত বর্জ্য ২ মিটার উঁচু স্তরে বিছিয়ে দেওয়া হয় ও তার ওপর ২০-২৫ সেমি মাটির স্তর চাপা দেওয়া হয়। মাটির মধ্যে থাকা জীবাণু বর্জ্যের ভৌত রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়। দীর্ঘদিন চাপা পড়া অবস্থায় থেকে ওই জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য মাটিতে মিশে যায়।
সতর্কীকরণ
তবে এক্ষেত্রে কয়েকটি সতর্কীকরণ নেওয়া আবশ্যিক।
যথা— (i) ল্যান্ডফিলিং এর জন্য নির্বাচিত স্থান শহরাঞ্চল থেকে দূরে হতে হবে।
(ii) জায়গাটির আয়তন বেশি হতে হবে।
(iii) স্থানটিতে জনবসতি থাকবে না। কারণ বর্জ্যের দূষণ মানবশরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
(iv) ময়লা জল বা বর্জ্যের বিয়োজিত অংশ যাতে কোনোভাবেই ভৌম জলস্তরকে দূষিত না করে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
(v) ময়লার গাড়ি যাতে সুনির্দিষ্ট খোলা স্থানে সহজে পৌঁছোতে পারে অর্থাৎ অঞ্চলটি পরিবহণযোগ্য হয় তা দেখা ।
(vi) অনেক দেশে সমুদ্রতীরে বর্জ্য নিক্ষেপ করা হয়। এক্ষেত্রে দেখতে হবে স্থানটি যেন সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে বিনষ্ট না করে।
(vii) ময়লা জমা করার স্থানগুলিকে উন্মুক্ত না রেখে কংক্রিটের দেয়াল দিয়ে বাঁধিয়ে দিতে হবে।
জমি ভরাটকরণের বা ল্যান্ডফিলিং এর সুবিধা
(i) বায়ুদূষণ তথা পরিবেশ দূষণের পরিমাণ কমে যায়।
(ii) ল্যান্ডফিলিং এর ফলে যে গ্যাস নির্গত হয়, তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়।
(iii) বর্জ্য পদার্থ আবৃত অবস্থায় থাকে বলে মাছি,মশা,ইঁদুর,কীটপতঙ্গ বাসা বাঁধতে পারে না।
ফ্লাই অ্যাশ কী?
- ফ্লাই অ্যাশ এর বাংলা প্রতিশব্দ হল ‘ভাসমান বা উড়ন্ত বস্তুকণা’ বা ‘ছাই’। এর কনার ব্যাস ০.০২ মাইক্রোমিটার থেকে ১০ মাইক্রোমিটার।(১um=১মিটারের ১০ লক্ষ ভাগের ১ ভাগ)
উৎস- তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা পোড়ানোর ছাই, কারখানার দূষিত গ্যাস ও ধুলোকণা, সিমেন্টের ধুলো, বাড়ির বর্জ্য বা ঘরবাড়ির ডাস্টিং এর সময় ওড়া ধুলোকণা, ইটভাটার ধুলো বা গুঁড়ো উপাদান, তামাকের গুঁড়ো, চাষের জমির পেস্টিসাইডের অংশবিশেষ।
উপাদান- কার্বন, ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, নাইট্রোজেন, সালফার।
প্রভাব- ক) মানবশরীরে ফুসফুসজনিত রোগ (হাঁপানি, ব্রংকাইটিস, শ্বাসকষ্ট) চোখজ্বালা, মাথাব্যথা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা যায় ।
খ) পাতলা আস্তরণে বাতাস ঢেকে যাওয়ায় ধোঁয়াশা সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়, ফলে বায়ু দূষিত হয়।
গ) ভাসমান কয়লার গুঁড়োকে বলে কোলডাস্ট।
ঘ) তৈল শোধনাগারে ক্রুড অয়েল শোধনের সময় অসম্পূর্ণ দহনের মাধ্যমে যে কণা উৎপন্ন হয়, তাকে বলে পেট্রোকোক। পেট্রোকোকে ৯% কার্বনকণার উপস্থিতি থাকে।
স্বচ্ছ ভারত অভিযান
২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বচ্ছ ভারত অভিযানের সূচনা করেন। ভারতবর্ষের ৪০৪১ টি নগর ও গ্রামে স্বচ্ছতার সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পের সূচনা হয়। স্বচ্ছতার জন্য গৃহীত এটি ভারতের বৃহত্তম প্রয়াস। এই অভিযানের সময়সীমা ২০১৪–২০১৯।
স্বচ্ছ ভারত অভিযান উদ্দেশ্যগুলি হল-
(১) স্বাস্থ্যকর শৌচালয় নির্মাণ
(২) প্রকাশ্যে মলমূত্র ত্যাগ বন্ধ করা
(৩) পৌরসভার বর্জ্যের ১০০% ব্যবস্থাপনা করা
এই অভিযান সফল করার জন্য ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসের মধ্যে গ্রামে ১২ কোটি শৌচাগার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
বর্জ্য পদার্থ দ্বিতীয় পর্ব >>>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রিলিমিনারির পরীক্ষার (PT) বিভিন্ন টপিকের উপর মকটেস্ট
>>>>
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
বর্জ্য কাকে বলে। বর্জ্য পদার্থের শ্রেণিবিভাগ। তেজস্ক্রিয় বর্জ্য। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। Waste Management। বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ। কম্পোস্টিং। Composting। স্ক্রাবার। Scrubber। ভরাটকরণ। ল্যান্ডফিলিং। ফ্লাই অ্যাশ। স্বচ্ছ ভারত অভিযান।