হুন আক্রমন (তােরমান, মিহিরকুল )
SET BY - MANAS ADHIKARY
হুন আক্রমন (প্রথম পর্ব)। Hun Akromon Part -I.
হুন আক্রমণ। তোরমান। মিহিরকুল। ভারতের রক্ষাকর্তা। ভারতের এ্যটিলা। Hoon Akromon| Mihirkul| Torman। huns।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো হুন আক্রমণ(প্রথম পর্ব)। আজ এই পর্বে থাকছে হুন আক্রমণ সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা । পরবর্তী পর্বে হুন আক্রমণ সম্পর্কিত অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হবে । পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
হুন আক্রমণ সংক্ষিপ্তরূপ| About huns Akromon .
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
মৌর্য পরবর্তী যুগে যেমন ভারতের কেন্দ্রীয় শক্তি ভেঙে পড়েছিল এবং ভারতবর্ষে বিভিন্ন আঞ্চলিক রাজ্যের উদ্ভব হয়েছিল ও বৈদেশিক আক্রমনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছিল ঠিক তেমনই গুপ্ত পরবর্তী যুগে কেন্দ্রীয় রাজশক্তির দুর্বলতার সুযােগে ভারতবর্ষে বহু আঞ্চলিক রাজ্যের উদ্ভব হয় এবং হুন আক্রমনের ফলে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটে। এই আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতার যুগে উত্তরভারতে চারটি রাজ্য এবং রাজবংশ গড়ে ওঠে। সেগুলি হল কনৌজের মৌখরী বংশ, থানেশ্বরের পুষ্যভুতিবংশ, গুজরাটের মৈত্ৰক বংশ, মগধে ক্ষীয়মান গুপ্তবংশ৷ একইসময়ে দক্ষিন ভারতে চালুক্য বংশ, রাষ্ট্রকুট বংশ, পল্লব বংশ এবং চোল বংশের উত্থান ঘটেছিল৷ সমস্ত ভারতবর্ষে এইসব আঞ্চলিক শক্তিগুলি প্রাধান্য স্থাপনের জন্য এবং রাজনৈতিক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য নিজদের মধ্যে সংগ্রামে লিপ্ত হয়। এই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠার যুগে হুন আক্রমন ভারতবর্ষের ইতিহাসে একটি উল্লেখযােগ্য ঘটনা। হুনরা ছিল মধ্যএশিয়ার এক যাযাবর জাতি। খ্রঃপূর্ব দ্বিতীয় শতকে উত্তর-পশ্চিম চীনে মঙ্গোলিয়ায় ইউ-চি জাতিকে পরাস্ত করে হুনদের কৃষ্ণশাখাটি ইউরােপে ঢুকে ডন নদীর তীরে আসে তারপর তুরস্ক, পূর্ব ইউরােপ এবং রােম সাম্রাজ্য ধংস করে। শ্বেতহুনরা মধ্য এশিয়ার কাস্পিয়ান সাগরের কাছাকাছি অক্ষু নদীর উপত্যকা অঞ্চল ত্যাগ করে ভারতবর্ষ আক্রমনের জন্য অগ্রসর হয়। এদের নেতা ছিলেন তােরমান। হুনরা ছিল অতি দূধর্ষ ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির উপজাতি। ভিতােরি স্তম্ভলিপি থেকে জানা যায় যে প্রথমবার হুনদের আক্রমন প্রতিহত করেন গুপ্তসম্রাট স্কন্দগুপ্ত। এজন্য স্কন্দগুপ্তকে বলা হয় ‘ভারতের রক্ষাকর্তা’। স্কন্দগুপ্তের মৃত্যুর পর হুনরা আবার ভারতবর্ষ আক্রমন শুরু করে। তােরমান - গান্ধার, পাঞ্জাব, এবং গুপ্ত সাম্রাজ্যের কিছু অংশ দখল করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, মালব ও কাশ্মীর থেকে পাওয়া তােরমানের মুদ্রা ‘তােরমানশাহী’ থেকে জানা যায় যে, এইসব স্থানে তােরমান সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন। তিনি ‘মহারাজা’ , ‘মহারাজাধিরাজ’ উপাধি গ্রহন করেছিলেন। তােরমান সম্পর্কে মালবের ইরন নামক স্থানে একটি শিলালিপি উৎকীর্ন আছে৷ জৈনগ্রন্থ কুবলয়মালা থেকে জানা যে সূর্যপ্রতীক চিহ্নিত মুদ্রা তােরমান প্রচলন করেন। তােরমান জৈনধর্মের অনুরাগী হলেও বৌদ্ধধর্মকে খুব শ্রদ্ধা করতেন। পাঞ্জাব, রাজপুতনা এবং পূর্ব মালবে তার আধিপত্য স্থায়ী হয় নি৷ ভানুগুপ্ত ও গােপরাজ মিলে তােরমানকে পরাজিত করেন এবং পরাজিত হয়ে তিনি সিন্ধুনদের অপর তীরে চলে যান। জৈন গ্রন্থ কুবলয় মালা অনুসারে জানা যায় যে, শেষ জীবনে তিনি চন্দ্রভাগা নদীর তীরে পব্বৈতা গ্রামে বসবাস করতেন। মিহিরাকুল (বা মিহিরগুল) - তােরমানের মৃত্যুর পর তার পুত্র মিহিরকুল পুনরায় ভারতবর্ষ আক্রমন করেন। কুরা নামক শিলালিপি থেকে মিহিরকুল সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়। মিহিরকুল শিবের উপাসক ছিলেন। মিহিরকুল অত্যন্ত শক্তিশালী ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির ছিলেন। তাঁর রাজধানী ছিল শাকল বা শিয়ালকোট। মিহিরকুল প্রথম দিকে ছিলেন ঘােরতর বৌদ্ধ বিদ্বেষী৷ সেইসময় তিনি বহু বৌদ্ধমঠ ও মন্দির ধ্বংস করেন। পরবর্তীকালে তিনি বৌদ্ধধর্ম গ্রহন করেন। হিউয়েন-সাঙ, চৈনিক দুত সােং-ইয়ুং এবং কলহনের রাজতরঙ্গিনীর বিবরন থেকে মিহিরকুলের নিষ্ঠুরতা ও রাজ্যজয়ের কথা জানা। যায়। তাকে ভারতের ‘এটিলা’ বলা হয়। একসময় গুপ্তসম্রাট ভানুগুপ্ত (মতান্তরে বালাদিত্য) মিহিরকুলকে পরাজিত করেন এবং বন্দী করেন। পরে | তার মায়ের আদেশে তাকে ছেড়ে দেন৷ পশ্চিম মালবের মান্দাশােরের অধিপতি যশােবর্মন এর মান্দাশাের লিপি থেকে জানা যায় যে, তিনি মিহিরকুলকে পরাজিত করে মধ্যভারত থেকে হুন-আতঙ্ক দুর করেন। পরাজিত মিহিরকুল কাশ্মীরে আশ্রয় গ্রহন করে। সীমান্ত অঞ্চলের বিভিন্ন অংশে কয়েকটি গােষ্টিতে বিভক্ত হয়ে তারা রাজত্ব করতে থাকে। কালক্রমে ভারতীয় ধর্ম ও সংস্কৃতি গ্রহন করে এবং ভারতীয়দের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে তার ভারতীয় সমাজে মিশে যায়। তাদের একটি শাখা রাজপুত নামে পরিচিতি লাভ করে। মিহিরকুলের মুদ্রায় লক্ষ্মী, শিব প্রভৃতি দেব-দেবীর প্রতিমূত্রি খােদাই ছিল। এছাড়াও তাঁর মুদ্রায় বৃষের প্রতিমূর্তি খােদিত আছে৷ বৃষ হল শিবের বাহন, এথেকে মনে করা হয় যে তিনি শিবের পরম ভক্ত ছিলেন৷ ‘মাতৃচেত’ নামক নামক এক ব্যক্তি মিহিরকুলের আমলে গােয়ালিওরের পর্বতশিখরে একটি সূর্য মন্দির নির্মান করেছিলেন৷ মিহিরকুলের মুদ্রায় সংস্কৃত ভাষা ও ব্রাহ্মী লিপির ব্যবহার দেখা যায়৷
হুন আক্রমন দ্বিতীয় পর্ব (অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর) >>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে