বিপিনচন্দ্র পাল
Set by- Manas Adhikary
বিপিনচন্দ্র পাল প্রথম পর্ব। Bipin Chandra Pal– I
বিপিনচন্দ্র পাল। বাংলার বার্ক। বার্ক অব বেঙ্গল। নিউ ইন্ডিয়া। Soul of India । বাংলার ওয়াটার অব স্কট। নিষ্ক্রীয় তত্ত্বের প্রথম প্রচারক । স্বাধীনতার সিংহ।
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই, আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের কংগ্রেসের অন্যতম চরমপন্থী ব্যক্তিত্ব বিপিনচন্দ্র পাল । এই পর্বে থাকছে বাল গঙ্গাধর তিলক সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা । পরবর্তী পর্বে কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলচনা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
বিপিনচন্দ্র পাল সংক্ষিপ্তরূপ। About Bipin Chandra Pal.
বিপিনচন্দ্র পাল ছিলেন দেশপ্রেমিক, রাজনীতিবিদ, বাগ্মি, সাংবাদিক ও লেখক। 1857 সালের 7 নভেম্বর তিনি জন্মগ্রহন করেন হবিগঞ্জ জেলার সদর থানার পইল গ্রামে। তাঁর পিতা ছিলেন জমিদার রামচন্দ্র পাল। পারিবারিকভাবেই বিপিন চন্দ্র পালের মধ্যে সাম্য ও মানবতাবোধের দৃষ্টিভঙ্গী গড়ে ওঠে। 1866 সালে বিপিন চন্দ্র পালকে তাঁর পিতা নয়া সড়ক স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। 1869 সালে তাকে সিলেট গভর্নমেনট স্কুলে ভর্তি করানো হয়। এই স্কুল থেকে তিনি এন্ট্রান্স পরীক্ষায় রেকর্ড নম্বর পেয়ে পাশ করেন। 1875 সালে প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হন এবং 1877 সালে এফ এ পরীক্ষা দেন। 1879 সালে উড়িষ্যার কটক একাডেমিতে প্রথমে সাধারন শিক্ষক হিসাবে পরে প্রধান শিক্ষক হিসাবে শিক্ষকতা করেন। পরে তিনি কলকাতা ও ব্যাঙ্গালোরে প্রধান শিক্ষক রূপে কাজ করেছিলেন। 1881 সালে ডিসেম্বর মাসে তিনি শ্রীমতী নৃত্যকালীকে বিয়ে করেন। নৃত্যকালী ছিলেন পন্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রীর পালিত বিধবা কন্যা। সংসার জীবনের পুর্বে বিপিন চন্দ্র পাল রাজনীতিতে যুক্ত হন। 1877 সালে তিনি সেকালের উদারপন্থি সমাজ সংস্কারক দার্শনিক শিবনাথ শাস্ত্রীর আদর্শে ও প্রেরনায় স্বাধীনতার সাধকদলের সদস্য হিসাবে দীক্ষা গ্রহন করেন। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীও বিপিন চন্দ্র পালকে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহনে উৎসাহিত করেন। শীঘ্রই তিনি বালগঙ্গাধর তিলক, লাজপত রায় এবং শ্রী তারবিন্দের চরমপন্থী মতাদর্শে দীক্ষিত হন। বিপিন চন্দ্র পাল 1885 থেকে কংগ্রেসের প্রগতিশীল অংশের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং 1886 ও 1887 তে কলকাতা ও মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত যথাক্রমে কংগ্রেসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার্ষিক অধিবেশনে তিনি অশশগ্রহন করেন। 1904 সালে বোম্বাইতে কংগ্রেসের সভাপতিত্ব করেন। 1905 সালে বঙ্গভঙ্গের পরপরই বিপিন চন্দ্র পাল 'বন্দেমাতরম’ নামক একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং নিজেই এর সম্পাদক হন। তিনি বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহন করেন। 1906 ও 1908 সালে করিমগঞ্জের সুরমা উপত্যকায় তিনি তাঁর জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন। 1905-1908 সালে তাঁর জ্বালাময়ি বক্তৃতায় ব্রিটিশদের ভিত নড়ে যায়। 1907 সালে তিনি মাদ্রাজে যে বক্তৃতা দেন তাতে সারাদেশে এক জাগরনের সৃস্টি হয়। সেক্রেটারী অব স্টেট ও বড়লাট বিপিন চন্দ্র পালকে শৃঙ্খলিত করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। 1906 সালের 18 সেপ্টেম্বর বিপিনচন্দ্র পাল তাঁর বন্দেমাতরম পত্রিকায় তিনি লেখেন 'আমরা যদি সরকারকে কোনরূপ সাহায্য করতে অস্বীকৃত হই, তাহলে একদিনেই শাসনতন্ত্র অচল হয়ে পড়বে’। বন্দেমাতরম পত্রিকার সম্পাদকরূপে তাকে শ্রী অরবিন্দের বিরুদ্ধে আনা মোকদ্দমায় সাক্ষ্য দিতে বলা হয়। তিনি জানতেন তিনি সাক্ষ্য দিলে শ্রী অরবিন্দের জেল নিশ্চিত। তাই বিপিন চন্দ্র পাল সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করেন। ফলে কোর্ট অবমাননার দায়ে তাকে ছয় মাসের সাধারন কারাদন্ড ভোগ করতে হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি ইংল্যান্ডে যান এবং সেখানে 'স্বরাজ' নামক পত্রিকা প্রকাশ করেন। 1911 সালে তিনি দেশে ফিরলেই পুনরায় তাঁকে রাজদ্রোহের অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়। 1912 সালে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। জেল খেটে তিনি যখন বের হয়ে আসেন তখন বিপিনচন্দ্র পালকে সর্বস্তরের জনগনের পক্ষ থেকে কলকাতায় এক অভ্যর্থনা প্রদান করা হয় এবং এই অভ্যর্থনা সভার সঙ্গীত রচনা করেন দ্বিজেন্দ্রলাল-
'বঙ্গ আমার জননী আমার ধাত্রী আমার দেশ,
আমরা মা তোর ঘুচাবকালিমা
মানুষ আমরা নহিতো মেষ'।
অসহযোগ আন্দোলনের প্রাগমূহুর্তে গান্ধীজীর দেশময় অসহযোগ আন্দোলন চালাবার প্রস্তাব জাতিয় মহা সমিতিতে পাশ হলে - বাংলায় তখনও এই প্রস্তাবে মত দেয় নি। সমগ্র ভারত বাংলার নেতা দেশ-বন্ধুর মহিপতির উপর নিবদ্ধ দৃষ্টি। এমন সময় বরিশালের প্রাদেশিক সম্মিলনিতে দেশবন্ধু অসহযোগের স্বপক্ষে মত ব্যক্ত করেন। সেই সময় সভাপতির আসনে থেকে বিপিনচন্দ্র পাল এর বিরোধিতা করেন। তিনি প্রস্তাব দেন বিলাতে একদল লোক পাঠিয়ে এক চরমপত্র ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিকট উপস্থিত করা হোক। গান্ধিজির নেতৃত্বে সংগ্রামের কৌশল নিয়ে হতাশ হয়ে কংগ্রেসের নেতা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মতিলাল নেহেরু, বিপিনচন্দ্র পাল প্রমুখ নেতৃবর্গ এক নতুন কর্মসূচী নিয়ে স্বরাজ্যদল বা স্বরাজ পার্টি গঠন করেন।
স্বরাজ দলের প্রধান কর্মসূচীঃ-
ক) আইন সভায় প্রবেশ করে সরকারের কার্যের বিরোধিতা করা।
খ) সরকারি বাজেট প্রত্যাখ্যান করা।
গ) নানাবিদ প্রস্তাব উত্থাপন করে জাতিয়দাবাদের অগ্রগতিতে সহায়তা করা।
ঘ) সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক নীতি গ্রহন করে বিদেশী শোষন বন্ধ করা।
ব্রিটিশ সরকার ভারতের শাসন আইন সংস্কারের জন্য যে সাইমন কমিশন গঠন করেন তাতে কোন ভারতীয়কে না নেওয়ার জন্য বিপিন চন্দ্র পাল সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জনসভায় জ্বালাময়ী বক্তৃতার মাধ্যমে ভারতবাসীকে সাইমন কমিশনকে বর্জন করাতে উদ্বুদ্ধ করেন। চা শ্রমিক ও শিল্প শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলনে ভারতবর্ষের জাতীয় নেতাদের মধ্যে যারা সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন তাঁদের মধ্যে বিপিনচন্দ্র পাল ছিলেন অন্যতম। 1932 সালে কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিপিনচন্দ্র পাল দ্বিতীয় পর্ব>>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
বিপিনচন্দ্র পাল। বাংলার বার্ক। বার্ক অব বেঙ্গল। নিউ ইন্ডিয়া। Soul of India । বাংলার ওয়াটার অব স্কট। নিষ্ক্রীয় তত্ত্বের প্রথম প্রচারক । স্বাধীনতার সিংহ।