পুষ্যভুতিবংশ ও হর্ষবর্ধন
SET BY - MANAS ADHIKARY
পুষ্যভুতিবংশ ও হর্ষবর্ধন| Information Hasabardhan.
হর্ষবর্ধন| Harsabardhana| About Harsabardhana| Harsabardhan MCQ.
নমস্কার, অভিনব একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো পুষ্যভুতিবংশ ও হর্ষবর্ধন। এই পর্বে থাকছে পুষ্যভুতিবংশ ও হর্ষবর্ধন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। পরবর্তি পর্বে পুষ্যভুতিবংশ ও হর্ষবর্ধন সম্পর্কিত অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
পুষ্যভুতিবংশ ও হর্ষবর্ধন সংক্ষিপ্তরূপ ও অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। Pushyabhuti Dynasty and Harshavardhana Information and MCQ.
প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন
টেলিগ্রাম গ্রুপ এ যোগদান করার জন্য - Click Here
ভারতে হুনশক্তি ধ্বংস হলেও গুপত সাম্রাজ্য তার পুরানাে গৌরব ফিরে পায়নি। খ্রীস্টীয় ষষ্ঠ শতকে বিশাল গুপ্ত সাম্রাজ্য ভেঙে গিয়ে কতগুলি ছােট ছােট স্বাধীন রাজ্যের উদ্ভব হয়। ঐ রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল পুষ্যভুতি বংশের অধীন থানেশ্বর রাজ্য। থানেশ্বর রাজ্যটিতে ক্ষীয়মান গুপ্তসম্রাটদের অধীনে থাকা পুষ্যভুতি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা পুষ্যভুতি শাসন করত। তারা জাতিতে ছিল বৈশ্য। এরপর পর্যায়ক্রমে পুষ্যভুতি বংশের নরবর্ধন, রাজ্যবর্ধন এবং আদিত্যবর্ধন গুপ্তসম্রাটদের অধীনে থেকে রাজকার্য পরিচালনা করেছিলেন। পুষ্যভুতি বংশের প্রভাকরবর্ধন সর্বপরথম গুপ্তসম্রাটদের বেড়াজাল ছিন্ন করে থানেশ্বরে স্বাধীন পুষ্যভুতি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। সেক্ষেত্রে পুষ্যভুতি বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে ধরা হয় প্রভাকরবর্ধনকে। তবে কোন কোন বইতে পুষ্যভুতি বংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে প্রভাকর বর্ধনকেই দেখানাে হয়েছে। থানেশ্বর-রাজ প্রভাকর বর্ধনের আকস্মিক মৃত্যুর পর তাঁর জেষ্ঠ্যপুত্র রাজ্যবর্ধন পিতার সিংহাসনে বসেন। এইসময় শশাঙ্ক ও মালবরাজ দেবগুপ্ত প্রভাকর বর্ধনের জামাতা এবং কনৌজের মৌখরি বংশের রাজা গ্রহবর্মাকে হত্যা করে এবং মৌখরি রানী রাজ্যশ্রীকে বন্দিনী করে। নিজ ভগিনী রাজ্যশ্রীকে উদ্ধার করার জন্য রাজ্যবর্ধন কনৌজে যাত্রা করেন এবং মালবের রাজা দেবগুপ্তকে নিহত করেন কিন্তু শশাঙ্কের কাছে রাজ্যবর্ধন নিহত হন। শােনা যায় যে গৌড়রাজ শশাঙ্ক বিশ্বাসঘাতকতা করে রাজ্যবর্ধনকে হত্যা করেন। যদিও এই ব্যাপারে সবাই একমত নহে। যাইহােক রাজ্যবর্ধনের মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা হর্ষবর্ধন মাত্র ষােলাে বছর বয়সে (৬০৬ খ্রীষ্টাব্দে) সিংহাসনে আরােহন করেন।হর্ষ সিংহাসনে বসার পর ভগিনী রাজ্যশ্রীকে উদ্ধারের জন্য এবং শশাঙ্ককে শাস্তি দেবার জন্য যুদ্ধযাত্রা করেন। কিন্তু পথিমধ্যে খবর পান যে রাজ্যশ্রী মুক্ত হয়ে বিন্ধ্য পর্বতে দিকে চলে গেছেন। তখন হর্ষ নিজের মন্ত্রী ভান্ডির উপর যুদ্ধের দায়িত্বভার অর্পন করে রাজ্যশ্রীকে খুঁজতে বিন্ধ্য পর্বত চলে যান। সেখানে উপজাতিদের সাহায্য নিয়ে রাজ্যশ্রীকে নিজে উদ্ধার করেন। ইতিমধ্যে শশাঙ্ক কনৌজ ছেড়ে নিজ রাজ্য গৌড়ে ফিরে যান। এরপর হর্ষবর্ধন কনৌজের সিংহাসন, নিজ পৈতৃক সিংহাসন থানেশ্বরের সাথে যুক্ত করে কনৌজকে তার রাজধানীতে পরিনত করেন। শশাঙ্ক মারা গেলে হর্ষ গৌড়রাজ্য দখল করে নেয় কামরূপের রাজা ভাস্করবর্মার সাহায্যে। নিজে উড়িষ্যা ও গাঞ্জাম অধিকার করে বাকী অংশটুকু ভাস্করবর্মাকে দিয়ে দেন। সার্বভৌম শক্তি হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা ছিল হর্ষবর্ধনের লক্ষ্য। তিনি গুজরাটের বলভী রাজ্যের রাজা ধ্রুবসেনকে পরাস্ত করেন। ধ্রুবসেন হর্ষের সাথে বশ্যতামুলক মিত্রতা স্থাপন করেন। গঞ্জাম ও গুজরাট দখল করার ফলে হর্ষের সাথে চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয় এবং নর্মদানদীর তীরে যুদ্ধে যে হর্ষবর্ধন চূড়ান্তভাবে পরাজিত হন তা দ্বিতীয় পুলকেশীর আইহােল লিপি থেকে জানা যায়। আইহােল লিপিতে হর্ষকে সকলােত্তরপথনাথ বলে অভিহিত করা হয়। হর্ষ যখন (৬০৬খ্রষ্টাব্দে) সিংহাসনে আরােহন করেন তখন “শিলাদিত্য” উপাধি গ্রহন করেন এবং সময়টিকে মনে রাখার জন্য তিনি হর্ষাব্দ নামক এক নতুন বর্ষ গণনার প্রচলন করেন। তিনি খুব কম বয়সে সিংহাসনে আরােহন করেন বলে অনেকে তাকে “রাজকুমার” উপাধিতে ও ভূষিত করেন। হর্ষ ছিলেন সুশাসক। রাজ-কর্মচারীদের বেতনের পরিবর্তে তিনি অনেকক্ষেত্রে ভুমি দান করতেন। জয়সেন নামক জনৈক বৌদ্ধ পন্ডিতকে তিনি উড়িষ্যার আশিটি গ্রাম দান করেন। তাঁর রাজ্যে জীবহত্যা নিষিদ্ধ ছিল। শাসনকার্যের সুবিধার জন্য হর্ষ তার সাম্রাজ্যকে কয়েকটি ভুক্তি বা প্রদেশে, প্রদেশ গুলিকে কয়েকটি বিষয় বা জেলাতে এবং জেলাগুলিকে কয়েকটি গ্রামে বিভক্ত করেন। গ্রামের শাসনভার ছিল গ্রামিক এর হাতে। তিনি করনিক নামক কর্মচারীর সাহায্যে গ্রামিক গ্রাম শাসন করত। তাঁর সেনাবাহিনীর চারটি শাখা ছিল; যথা -পদাতিক, অশ্বারােহী, রথী ও হস্তিবাহিনী৷ অশ্বারােহী বাহিনীর প্রধানকে বলা হত কুন্তল৷ পদাতিক বাহিনীর উচ্চ পদাধিকারীগন কে বলা হত বলাধিকৃত, মহাবলাধিকৃত। সাধারন সেনারা চট বা ভট নামে পরিচিত ছিল। হর্ষবর্ধনের সময় তিনধরনের কর আদায় করা হত; যথা- ভাগ, হিরন্য ও বলি৷ হর্ষবর্ধন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপােষকতা করতেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন বিদ্যানুরাগী ও সাহিত্যচর্চায় আগ্রহী৷ তিনি নাগানন্দ, প্রিয়দর্শিকা ও রত্নাবলী নামক নাটক রচনা করেন। তার সভাকবি বাণভট্ট কাদম্বরী ও হর্ষচরিত রচনা করেন। হর্ষচরিত থেকে হর্ষবর্ধনের জীবনী সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। এছাড়া জয়সেন, ময়ূর,দিবাকর প্রভৃতি পন্ডিত তার সভায় ছিলেন। হর্ষ ছিলেন বৌদ্ধধর্মালম্বী তবে তিনি সমস্ত ধর্মকে খুবই শ্রদ্ধা করতেন। হর্ষ প্রতি পাঁচ বছর অন্তর গঙ্গা-যমুনার সঙ্গমস্থল প্রয়াগে এক দান মেলার আয়ােজন করতেন। সেটি চলত তিনমাস ধরে। যে প্রান্তরে এটি আয়ােজিত হত তাকে বলা হত ‘দানক্ষেত্র বা সন্তোষক্ষেত্র’৷ এই মেলায় হর্ষ নিজের সকল সঞ্চিত অর্থ দান করত এমনকি নিজের রাজবস্ত্রটি ও দান করে দিয়ে সাধারন বস্ত্র পরিধান করতেন৷ এই মেলাটির নাম ছিল “মহামােক্ষ-পরিষদ”। হর্ষের রাজসভায় চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ বিশেষ পৃষ্ঠপােষকতা লাভ করে।
হর্ষবর্ধন দ্বিতীয় পর্ব (অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)>>>>
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here
মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here
ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here
হর্ষবর্ধন| Harsabardhana| About Harsabardhana| Harsabardhan MCQ.