Type Here to Get Search Results !

ব্রাহ্মসমাজ প্রথম পর্ব [Atmiya Sabha]

ব্রাহ্মসমাজ
Set by – Manas Adhikary

সভা ও সমিতির যুগ তৃতীয় পর্ব।  

আত্মীয় সভা। বান্ধব সমিতি। ব্রাহ্মসভা। ব্রাহ্মসমাজ। আদি ব্রাহ্মসমাজ । ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ । নববিধান ব্রাহ্মসমাজ । সাধারন ব্রাহ্মসমাজ । তত্ববোধনী সভা। ব্রহ্মানন্দ।  তত্ববোধনী পত্রিকা। ব্রাহ্ম ধর্মের অনুষ্ঠান পদ্ধতি ।  সঞ্জীবনী পত্রিকা। 


নমস্কার, অভিনব  একাডেমিতে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই।  আজকে আপনাদের জন্য আলোচনা করা হলো ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সভা ও সমিতি। এই পর্বে থাকছে ব্রাহ্মসমাজ প্রথম পর্ব। এই পর্বে থাকছে ব্রাহ্মসমাজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।  পরবর্তী পর্বে কিছু অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর নিয়ে আলচনা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য (All Competitive exam: UPSC,WBPSC, WBCS, SLST, WBP SI, WBP Constable, SSC, PSC, School Service, Railway exam etc) এই টপিকটি খুবই  গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এছাড়াও আমাদের এই ব্লগে আপনি পেয়ে যাবে Indian History (Ancient, Medieval, Modern), Europe History, Geography, Gk, Bio-logy, Polity, child psychology, Environment Science, Pedagogy ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।


ব্রাহ্মসমাজ  সংক্ষিপ্তরূপ। About  Brahmo Samaj.  


আধুনিক ভারতের রূপকার রাজা রামমোহন রায় উনবিংশ শতাব্দীর ধর্মসংস্কার আন্দোলনের অঙ্গ হিসাবে বেদান্তের একেশ্বরবাদের ওপর ভিত্তি করে হিন্দুধর্মকে সংস্কারমুক্ত করার জন্য 1815 খ্রিস্টাব্দে প্রথমে 'আত্মীয় সভা' গঠন করেন।

হিন্দু ধর্ম ও সমাজ সংস্কারকারী রামমোহন রায় কলকাতায় 1815 সালে আত্মীয়সভা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলোচনার জন্য সমমনা ব্যক্তিদের একটি গোষ্ঠী, যারা কলকাতায় রামমোহনের মানিকতোলার বাগান বাড়িতে  নিয়মিতভাবে মিলিত হতেন। আত্মীয়সভা (বান্ধব সমিতি) ছিল এক ধরনের আলোচনা স্থল যেখানে রামমোহন রায় ও তাঁর বন্ধুরা ধর্মীয় ও সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে মত বিনিময় করতে সমবেত হতেন। আত্মীয়সভার সভাগুলিতে আলোচিত বিষয়ের মধ্যে ছিল মূর্তি পূজার অসারতা, বর্ণ প্রথা এবং সতীদাহ প্রথা ও বহুবিবাহের কুফলসমূহ এবং বিধবা বিবাহ প্রচলনের বাঞ্ছনীয়তা। 1828 খ্রিস্টাব্দের 20 আগস্ট মাসে তিনি একে ব্রাহ্মসভায় পরিণত করেন। 1830 এটি আবার ‘ব্রাহ্মসমাজ' নামে পরিচিত হয়। ব্রাহ্মসভার মূল বক্তব্য ছিল, ঈশ্বর এক ও অভিন্ন, সকল ধর্মের মূল কথা এক। তিনি মনে করেছিলেন ব্রাহ্ম আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতীয়গণের মধ্যে ধর্মগত ভেদাভেদ দূর হবে। ব্রাহ্ম সমাজের অন্যতম  লক্ষ্য ছিল সমাজ ও ধর্মসংস্কার । 1833 খ্রিস্টাব্দের 27 শে সেপ্টেম্বর রাজা রামমোহন রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর ঘনিষ্ট সহযোগী রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ নিষ্ঠা ও আন্তরিক পরিচর্যার দ্বারা ব্রাহ্মসমাজকে রক্ষা করেছিলন । পরবর্তীকালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কেশবচন্দ্র সেন -এর প্রচেষ্টায় ব্রাহ্মসমাজ একটি ধর্মীয় সংগঠনে পরিণত হয়। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্মসমাজের ভার গ্রহণ করে একে ব্রাহ্মধর্ম নামে নতুন এক ধর্ম হিসাবে প্রতিপন্ন করেন। রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করলেও নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিতেন। 1843 খ্রিস্টাব্দের 23 শে ডিসেম্বর মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কতিপয় বন্ধু ও আত্মীয় পরিজনসহ এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন । তাঁর উদ্যোগে 1839 খ্রিস্টাব্দে তত্ত্ববোধিনী সভা [Tattwabodhini Sabha] এবং 1843 খ্রিস্টাব্দে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা [ Tattwabodhini Patrika] প্রকাশিত হয় । এই দুটি প্রতিষ্ঠান উনবিংশ শতাব্দির বাংলার শিক্ষা, সমাজ ও সাংস্কৃতিক জীবনকে বহুলাংশে প্রভাবিত করেছিল । এই দুটি ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র হিসাবে কাজ করত। পরবর্তীকালে অক্ষয়কুমার দত্ত তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন।

কেশবচন্দ্র সেনের যোগদানে ব্রাহ্ম আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে । তাঁর প্রচেষ্ঠায় ব্রাহ্ম আন্দোলন ভারতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। কেশবচন্দ্র সেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের একান্ত অনুরাগী ছিলেন। কেশবচন্দ্র সেনের চরিত্রমাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ব্রহ্মানন্দ উপাধি দান করেছিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই উভয়ের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে 1865 খ্রিস্টাব্দে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কেশবচন্দ্র সেনকে ব্রাহ্মসমাজ থেকে অপসারিত করেন। ফলে কেশবচন্দ্র সেন তাঁর তরুণ অনুগামীদের নিয়ে 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' নামে একটি পৃথক ব্রাহ্মসমাজ স্থাপন করেন। পুরোনো ব্রাহ্মসমাজ 'আদি ব্রাহ্মসমাজ' নামে পরিচিত হয়। কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে নতুন ব্রাহ্ম সমাজ অচিরেই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে অসাধরণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি সমাজ সংস্কার ও জনসাধারণের নৈতিক উত্কর্ষ বিধানের জন্য ভারতীয় সংস্কার সভা নামে একটি সমাজসেবা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রধান কর্মসূচিগুলি ছিল শিক্ষাবিস্তার, নারীপ্রগতি, সুলভ সাহিত্য প্রকাশ, সেবাকার্য মাদক দ্রব্যাদি বর্জন প্রভৃতি। কিছুদিনের মধ্যে ভারতবর্ষীয় ব্রাম্মসমাজের মধ্যে বিভেদ ঘটে। কেশবচন্দ্রের চৈতন্যপ্রীতি, খ্রিস্টপ্রীতি, হিন্দু দেবদেবী ও অনুষ্ঠানের প্রতি বিশ্বাস ব্রাহ্ম সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। তিনি বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করলেও নিজের 14 বছর বয়সি কন্যা সুনীতিদেবীর সঙ্গে কোচবিহারের নাবালক রাজপুত্র নৃপেন্দ্রনারায়ণের বিবাহ দিলে তরুণ ব্রাহ্মরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ফলে 1878 খ্রিস্টাব্দে 15 মে কেশবচন্দ্র সেনের অনুগামীরা বাঙালি মনীষী শিবনাথ শাস্ত্রীর দায়িত্বে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ নামে পৃথক একটি ব্রাহ্ম সমাজ গঠন করেন। কেশবচন্দ্র সেনের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি 'নববিধান ব্রাহ্মসমাজ' নামে পরিচিত হয়।
 
 
 

 
 
 
 

ধন্যবাদ

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 

 

প্রতি সপ্তাহের মকটেস্টের জন্য নীচে দেওয়া Telegram গ্রুপে জয়েন করতে পারেন

 টেলিগ্রাম গ্রুপ  যোগদান করার জন্য - Click Here

পরিবেশের বিভিন্ন টপিকগুলি সম্পর্কে জানতে Click Here

ইউরোপের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে  - Click Here

প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্বন্ধে পড়তে - Click Here

মধ্য যুগের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here

আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে পড়তে - Click Here

 ভারতের ইতিহাসের পিডিএফ ডিটেইলস পেতে Click Here

 
 
আত্মীয় সভা। বান্ধব সমিতি। ব্রাহ্মসভা। ব্রাহ্মসমাজ। আদি ব্রাহ্মসমাজ । ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ । নববিধান ব্রাহ্মসমাজ । সাধারন ব্রাহ্মসমাজ । তত্ববোধনী সভা। ব্রহ্মানন্দ।  তত্ববোধনী পত্রিকা। ব্রাহ্ম ধর্মের অনুষ্ঠান পদ্ধতি ।  সঞ্জীবনী পত্রিকা। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad